ব্যুরো নিউজ,১১ নভেম্বর:ইরাকের নতুন বিবাহ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ইউনিসেফ একটি তথ্য প্রকাশ করে জানিয়েছে, ইরাক ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বিয়ের জন্য উচ্চতর বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু ইরাকের প্রস্তাবিত আইন প্রণয়ন দেশটির নারী অধিকার নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। নতুন এই আইনে বলা হয়েছে, পুরুষরা ৯ বছরের মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে, যা পশ্চিমী দুনিয়ার পাশাপাশি দেশটির অভ্যন্তরেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
নারী অধিকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে
সম্প্রতি ইরাকের পার্লামেন্টে একটি সংশোধনী বিল পাসের জন্য আনা হয়েছে, যেখানে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। এতটাই কম বয়সে বিয়ে হলে, সেটি বাল্যবিবাহের সংজ্ঞায় পড়ে। এ ছাড়া, এই বিল অনুসারে, মহিলাদের বিবাহবিচ্ছেদের অধিকারও থাকবে না। এমনকি, সন্তানদের অধিকার এবং উত্তরাধিকারও বাতিল করা হবে।এই আইন নিয়ে বিশ্বব্যাপী শোরগোল শুরু হয়েছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল, ইউনিসেফ, এই আইনটি ‘খুবই বিপজ্জনক’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, ইরাকের ২৮ শতাংশ মেয়ের বিয়ে ১৮ বছর বয়সের আগে হয়ে যায়। প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনটি কার্যকর হলে, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এবং এটি সমাজে বাল্যবিবাহের একটি বড় উদ্বেগ তৈরি করবে।তবে, এই সংশোধনী বিলের পক্ষে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, এটি অবৈধ সম্পর্ক থেকে মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তবে, বিপরীত মতও রয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে নারী ও শিশুদের প্রতি বৈষম্য সৃষ্টি হবে এবং তা জাতিগত, ধর্মীয় এবং সমাজিকভাবে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এছাড়া, এই বিলের খসড়ায় বলা হয়েছে, পরিবারে কোনো মতবিরোধ হলে, স্বামীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। শিয়া ও সুন্নি ধর্মীয় দফতরই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মতানৈক্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, আদালতের পরিবর্তে। এমনকি, পুরনো আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়স ছিল ১৫ বছর, কিন্তু এখন তা কমিয়ে ৯ বছর করা হতে পারে, যা এই নতুন বিলে স্পষ্ট করা হয়েছে।বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এবং মহিলা অধিকার সংস্থাগুলি এই সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করেছে। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এর ফলে ইরাকের নারী ও শিশুদের জন্য বিপদ আরও বাড়বে, এবং সমাজে ইতিমধ্যে চলতে থাকা বৈষম্য আরও গভীর হতে পারে।বিশ্বের অন্যান্য দেশেও, বিশেষ করে পশ্চিমী দুনিয়ায়, এই আইনটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। যদিও ইরাকের সরকারের পক্ষ থেকে এর পক্ষে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে নারী অধিকার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে।