ব্যুরো নিউজ ৮ আগস্ট ২০২৫ : আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও ভারত ও রাশিয়া তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দুই দেশ অ্যালুমিনিয়াম, সার, রেলপথ এবং খনি প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য একটি প্রোটোকল স্বাক্ষর করেছে। ভারত-রাশিয়া ওয়ার্কিং গ্রুপ অন মডার্নাইজেশন অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোঅপারেশনের ১১তম অধিবেশনে এই চুক্তি চূড়ান্ত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহযোগিতা
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বৈঠকটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং শিল্প ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও গভীর করার প্রতি উভয় দেশের প্রতিশ্রুতিকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে। বুধবার (৬ আগস্ট) নতুন দিল্লির বাণিজ্য ভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আধুনিকীকরণ, খনি, সার এবং রেল পরিবহন সংক্রান্ত সাব-গ্রুপগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়াও, মহাকাশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আধুনিক উইন্ড টানেল সুবিধা স্থাপন এবং কার্বন ফাইবার প্রযুক্তি, অ্যাডিটিভ ম্যানুফ্যাকচারিং এবং থ্রিডি প্রিন্টিং-এ যৌথ উন্নয়নের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত। উভয় পক্ষই বিরল মৃত্তিকা ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উত্তোলন, ভূগর্ভস্থ কয়লা গ্যাসীকরণ, এবং আধুনিক শিল্প অবকাঠামো তৈরিতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক
ভারতের ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার (NSA) অজিত দোভাল বৃহস্পতিবার মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বিশেষ ও সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, এই বছরের শেষ নাগাদ দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই বৈঠকের পর দোভাল ঘোষণা করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভারত সফরের তারিখ প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের শীর্ষ সম্মেলন সবসময়ই একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হয়।
আমেরিকার শুল্ক চাপ সত্ত্বেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক
এই বৈঠক ও সফরের প্রেক্ষাপটে , আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন রাশিয়ার তেল কেনার জন্য। এর ফলে ভারতের আমদানি করা পণ্যের উপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ব্রাজিলের সমান এবং আমেরিকার প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ভারত আমেরিকার এই শুল্ককে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে এবং নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।