pm modi starmer trade deal

ব্যুরো নিউজ ১৪ অক্টোবর ২০২৫ : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার মুম্বাইতে তাঁর ইংল্যান্ডের সমকক্ষ কেয়ার স্টারমার-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন যে, কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড এগ্রিমেন্ট (CETA) স্বাক্ষরের পর ভারত-ইংল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের নেতৃত্বে ভারত ও ইংল্যান্ড-এর সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখেছে। এই বছরের জুলাই মাসে ইংল্যান্ড সফরের সময় আমরা ঐতিহাসিক সিইটিএ চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।” মোদী জানান, এই চুক্তির ফলে দুই দেশের মধ্যে আমদানি খরচ কমবে, যুবকদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে, যা শিল্প ও ভোক্তা উভয়কেই সুবিধা দেবে।

তিনি উল্লেখ করেন, চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে স্টারমারের এই সফর এবং তাঁর সঙ্গে আসা রেকর্ড সংখ্যক বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল ভারত-ইংল্যান্ড অংশীদারিত্বে নতুন উদ্দীপনার প্রতীক।

 

ভারতের অগ্রগতি ‘অসাধারণ’: স্টারমারের প্রশংসা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলার কটাক্ষের দৃঢ় জবাব দেন কিয়ার স্টারমার। তিনি ভারতের বৃদ্ধির যাত্রাকে “অসাধারণ” বলে অভিহিত করেন।

ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের অর্থনৈতিক ও আর্থিক রাজধানী মুম্বাইতে আমাদের এই বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ভারতের বৃদ্ধির গল্প অসাধারণ।” তিনি ২০২৮ সালের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করার লক্ষ্য এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’-এর লক্ষ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অভিনন্দন জানান। স্টারমার বলেন, তিনি যা দেখেছেন তা প্রমাণ করে যে ভারত সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে রয়েছে এবং ইংল্যান্ড এই যাত্রায় অংশীদার হতে চায়। সেই কারণেই তিনি এই সপ্তাহে রেকর্ড ১২৬টি ইংল্যান্ডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে এসেছেন।

England : খালিস্থান সমস্যা পুনরায় উত্থাপন! চরমপন্থা মোকাবিলায় যৌথ পদক্ষেপের অঙ্গীকার ভারত-ব্রিটেনের

শিক্ষা, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা 

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে তাঁর সফরে শিক্ষা খাতের সবচেয়ে বড় এবং প্রভাবশালী প্রতিনিধিদল এসেছে। আনন্দের বিষয় যে, ইংল্যান্ডের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয় এখন ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে চলেছে।

টেকনোলজি এবং ইনোভেশনের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড এবং ভারত বিশ্ব নেতা হিসেবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বলে স্টারমার উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এআই (AI), উন্নত যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং আরও অনেক কিছুতে নতুন প্রতিশ্রুতি সহ প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা উদ্যোগের মাধ্যমে সহযোগিতা আরও গভীর করার সুযোগ নেওয়া হয়েছে।

England : ভারত-ইংল্যান্ড মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সুযোগ অনুসন্ধানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বৃহত্তম বাণিজ্য মিশন ভারতে ।

দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার অংশ হিসেবে ইংল্যান্ড গত সপ্তাহে ঘোষণা করে যে, তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে ইংল্যান্ডে-তৈরি লাইটওয়েট মাল্টিরোল মিসাইল সরবরাহের জন্য ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ড (৪৬৮ মিলিয়ন ডলার) এর একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, এই চুক্তির ফলে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সেই কারখানায় ৭০০টি কর্মসংস্থান সুরক্ষিত হবে, যেখানে বর্তমানে ইউক্রেনের জন্য একই অস্ত্র তৈরি হয়। এটি ইংল্যান্ড এবং ভারতের মধ্যে একটি বৃহত্তর ও জটিল অস্ত্র অংশীদারিত্বের পথ প্রশস্ত করবে, যা বর্তমানে দুই সরকারের মধ্যে আলোচনার অধীনে রয়েছে।

স্টারমার আরও জানান, স্টুডিও পরিদর্শন শেষে তারা ইংল্যান্ডে বলিউড চলচ্চিত্র তৈরির একটি চুক্তিও ঘোষণা করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ভারতের তরুণ প্রজন্মই ২০৪৭ সালের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর