ব্যুরো নিউজ ০৬ নভেম্বর ২০২৫ : আর্মেনিয়া ভারতের হিন্দুস্তান এ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) নির্মিত Su-30MKI বহুমুখী যুদ্ধবিমান কেনার জন্য আলোচনা চূড়ান্ত করছে।
‘ইন্ডিয়ান ডিফেন্স নিউজ’-এর খবর অনুযায়ী, এই চুক্তিটি এখন অনুমোদনের চূড়ান্ত ধাপে আছে এবং এটিকে আজারবাইজানের সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানের তৈরি ৪০টি JF-17C ব্লক III যুদ্ধবিমান কেনার একটি কৌশলগত জবাব হিসাবে দেখা হচ্ছে। এই চুক্তির আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ২.৫ থেকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চুক্তিতে কী কী থাকছে?
প্রথম দফায় ৮ থেকে ১২টি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করা হবে। সেই সঙ্গে রয়েছে বিমান বাহিনীর কর্মীদের প্রশিক্ষণ, গ্রাউন্ড সাপোর্ট এবং যুদ্ধাস্ত্রের ইন্টিগ্রেশন ব্যবস্থা।
বিমান সরবরাহ শুরু হতে পারে ২০২৭ সালের শেষের দিকে এবং ২০২৯ সালের মধ্যে প্রথম ধাপের কাজ শেষ হবে। HAL-কে ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন প্রতিশ্রুতি পূরণের পরই এই সরবরাহ শুরু করতে হবে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আর্মেনিয়াকে দেওয়া Su-30MKI বিমানে বিশেষ ভারতীয় উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে:
- উত্তম এ-ইএসএ (Uttam AESA) র্যাডার।
- অস্ত্রা Mk1 ও Mk2 ক্ষেপণাস্ত্র (বিয়ন্ড-ভিস্যুয়াল-রেঞ্জ মিসাইল)।
- ডিআরডিও (DRDO)-এর নিজস্ব ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট।
Israel : ” ভারত ভবিষ্যৎ বিশ্বশক্তি , ইসরায়েল আঞ্চলিক শক্তি ” – স্বাক্ষর হল ভারত ইসরায়েল আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা চুক্তি !
আর্মেনিয়ার জন্য এই চুক্তির গুরুত্ব
আর্মেনিয়া সম্প্রতি রাশিয়ার উপর সামরিক নির্ভরতা কমিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। এর আগে দেশটি ভারত থেকে পিনাকা মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম এবং ১৫৫ মিমি এটিএজিএস হাউইটজার কিনেছে।
আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপ প্রতিবেশী আজারবাইজানের সাথে তাদের তীব্র সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটে এসেছে। আজারবাইজান তাদের বায়ুসেনাকে শক্তিশালী করতে পাকিস্তান-চীন যৌথ উদ্যোগে তৈরি ৪০টি JF-17 থান্ডার ব্লক III যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে আর্মেনীয় বিমানবাহিনীতে মাত্র ৪টি Su-30SM এবং ১৬টি Su-25 রয়েছে, যেখানে আজারবাইজানের কাছে ১৪টি মিগ-২৯ এবং ৩৮টি Su-25 আছে।
এই চুক্তিটিকে আর্মেনিয়া আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে এবং আকাশে প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে দেখছে। প্রথম ধাপের পর তারা ভারতের থেকে তেজস Mk1A যুদ্ধবিমান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, এয়ার ডিফেন্স স্যাম ইউনিট ও ড্রোন সংগ্রহের কথাও ভাবছে।
ভারতের জন্য এই চুক্তির তাৎপর্য
ভারতের জন্য এই চুক্তিটি Su-30MKI-এর অন্যতম বৃহৎ রফতানি আদেশ। এর মাধ্যমে ভারত একটি অস্ত্র রফতানিকারী দেশ হিসেবে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করছে এবং “মেক ইন ইন্ডিয়া” ও “আত্মনির্ভর ভারত” উদ্যোগকে সফল করে তুলছে।
আর্মেনীয় Su-30MKI-তে ভারতীয় সাব-সিস্টেমগুলির কাস্টমাইজেশন এই প্রমাণ করে যে ভারত এখন শুধু যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী থেকে সম্পূর্ণ সমন্বিত সামরিক প্ল্যাটফর্ম রফতানিকারী দেশে পরিণত হয়েছে। এই চুক্তিটি ইউরেশীয় অঞ্চলের মতো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভারতের প্রভাব ও বাজারের দরজা খুলে দিচ্ছে।
USA : সাক্ষর হল যৌথ ভারত মার্কিন সামরিক পরিকাঠামো উন্নয়ন চুক্তি ,অত্যাধুনিক স্বদেশী ড্রোনের ওপর কাজ শুরু ভারতে !
পরবর্তী পদক্ষেপ ও চ্যালেঞ্জ
আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকায় শীঘ্রই চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। তবে, HAL-এর উৎপাদন সময়সূচি বজায় রাখা এবং একই সাথে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী বাধ্যবাধকতা পূরণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এই চুক্তির ফলে এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কে কেমন প্রভাব পড়ে, তা এখন দেখার বিষয়।



















