ব্যুরো নিউজ ১৬ মে: গ্রীষ্মে রোদের তাপে হাঁসফাঁস করছেন? ঠান্ডা ঠান্ডা পান্তা ভাতের সঙ্গে এক কোলে কাঁচা পেঁয়াজ পড়লেই যেন শরীর-মনের আরাম ফেরে। রুটির পাশে, রায়তায় বা স্যালাডে—গরমের দিনে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায় চোখে পড়ার মতো। কিন্তু রোজ কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া শরীরের পক্ষে কতটা ভালো? উপকারের পাশাপাশি কোনও অসুবিধার সম্ভাবনাও কি থাকে? বিশেষজ্ঞদের মতে, কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে একাধিক স্বাস্থ্যগুণ। তবে নির্দিষ্ট কিছু রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়াটা ঠিক নয়। দেখে নেওয়া যাক গরমে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ।
উপকারিতার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
১. শরীরকে রাখে হাইড্রেটেড ও ঠান্ডা করে
পেঁয়াজে প্রচুর জল এবং প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইট যেমন পটাশিয়াম থাকে। এই উপাদানগুলি শরীরে জলীয় ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। গরমে অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে যে ইলেক্ট্রোলাইট বেরিয়ে যায়, তা পূরণে সাহায্য করে পেঁয়াজ। ফলে হাইড্রেশন বজায় থাকে এবং গরমে ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা থেকে বাঁচায়।
২. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
পেঁয়াজের মধ্যে থাকা সালফার যৌগ ও কোয়ারসেটিন শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। ঘামের মাধ্যমে শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা কমে আসে। তাই গ্রীষ্মে এটি প্রাকৃতিক শীতলকারক হিসেবেই কাজ করে।
৩. অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর
পেঁয়াজে ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক যৌগ ও ভিটামিন সি থাকে যা শরীরে জমে থাকা ফ্রি র্যাডিকাল দূর করে এবং কোষের ক্ষতি রোধ করে। এটি গ্রীষ্মে উচ্চ তাপমাত্রা ও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিরূপ প্রভাব থেকেও সুরক্ষা দেয়।
৪. হজমে সহায়তা করে
পেঁয়াজে প্রাকৃতিক ফাইবার ও প্রিবায়োটিক থাকে যা পাচনক্রিয়ায় সহায়ক। পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজমের সমস্যা থাকলে নিয়মিত কাঁচা পেঁয়াজ খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
তবে যাঁদের অ্যাসিড রিফ্লাক্স, অ্যালার্জি বা ইরিটেবল বাওল সিনড্রোম রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কাঁচা পেঁয়াজ সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই এমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া এড়িয়ে চলাই ভাল। গরমের দিনে পান্তা ভাত, রুটি বা স্যালাডে নিশ্চিন্তে রাখুন কাঁচা পেঁয়াজ। এটি যেমন শরীর ঠান্ডা রাখে, তেমনই হজম ও ইমিউন সিস্টেমকেও মজবুত করে। তবে উপকার পাওয়ার আগে নিজের শরীরের চাহিদা ও সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।