ব্যুরো নিউজ,১৯ এপ্রিল: মালদহ সফর সেরে শুক্রবার রাতে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় পৌঁছেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শনিবার তাঁর যাওয়ার কথা শমসেরগঞ্জ, ধুলিয়ান সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। বিশেষ করে, ধুলিয়ান পুরসভার জাফরাবাদে খুন হওয়া পিতা-পুত্রের বাড়ি পরিদর্শন করতে পারেন তিনি। রাজ্যপালের সফরের আগে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। দ্রুত চূড়ান্ত করে ফেলা হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট। বিতরণ করা হচ্ছে বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী। যদিও বিজেপির দাবি, রাজ্যপালের আসার আগে মুখ বাঁচাতে তড়িঘড়ি করছে শাসক দল ও প্রশাসন। পাল্টা জবাবে তৃণমূল জানিয়েছে, প্রশাসনের এই কাজ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমাফিক স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ। তারা দাবি করছে, রাজ্যপালের সফর নিয়ে বাড়তি প্রস্তুতির কোনও প্রয়োজন পড়েনি।
মমতার খামে রাজনৈতিক কৌশল? দিলীপের দরজায় পৌঁছল নবান্ন!
ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে প্রশাসন, রাজনীতিতে চাপানউতোর
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শমসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ান এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অশান্তির ফলে আড়াইশোরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দোকানপাট ভাঙচুর হয়েছে শতাধিক। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ইতিমধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে সিলিং ফ্যান, টিউবলাইট, টর্চ, সুইচ বোর্ড, বালিশ, বিছানা প্রভৃতি। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুনর্বাসন দেওয়া হবে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে, জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরাও ধুলিয়ানে পৌঁছেছেন। তাঁদের সামনে কেঁদে ফেলেন কয়েকজন মহিলা, কেউ কেউ পা জড়িয়ে ধরে জানান, তাঁরা গ্রামের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদের দাবি, গ্রামে স্থায়ী বিএসএফ ক্যাম্প করা হোক। বিজেপির অভিযোগ, প্রশাসনের এই তৎপরতা আসলে রাজ্যপালের সামনে পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক দেখানোর প্রচেষ্টা। দলের জেলা নেতা গৌরীশঙ্কর ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, “যেখানে পাঁচ দিন ধরে মানুষ ঘরছাড়া, সেখানে আজ হঠাৎ করে আলো, পাখা লাগানো হচ্ছে। সদিচ্ছা থাকলে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছুদিন অপেক্ষার অনুরোধ,শুনলেন না কেন রাজ্যপাল?
অন্যদিকে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে জবাব দিয়েছেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান। তাঁর দাবি, “অশান্তির সময় ও পরে একমাত্র তৃণমূলই মানুষের পাশে ছিল। বাইরে থেকে কেউ পরিদর্শনে এলেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে, এমন দুরবস্থা এই রাজ্যের নয়।” ঘটনাচক্রে, রাজ্যপালের এই সফর কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশাও বেড়েছে। তাঁদের আশা, প্রশাসনের নজর পড়ায় শীঘ্রই তাঁরা নিরাপদ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।