ব্যুরো নিউজ ১০ জুন : সনাতন ধর্ম অনুযায়ী, জৈষ্ঠ্য মাসকে অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এই মাসের প্রতিটি মঙ্গলবার বিশেষ তাৎপর্য বহন করে এবং ‘বড় মঙ্গলবার’ নামে পরিচিত। আজ, ১০ জুন, বছরের শেষ ‘বড় মঙ্গলবার’ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। বিশ্বাস করা হয়, এই বিশেষ দিনে নিষ্ঠা সহকারে হনুমানজির পুজো করলে বজরঙ্গবলী তাঁর প্রিয় ভক্তদের উপর কৃপা বর্ষণ করেন এবং জীবনের সমস্ত বাধা দূর হয়।
বড় মঙ্গলবারের গুরুত্ব ও পৌরাণিক তাৎপর্য
জৈষ্ঠ্য মাসের মঙ্গলবারগুলি অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়। প্রবাদ আছে, এই দিনে হনুমানজির আরাধনা করলে জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি আসে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, যাদের জন্মকুণ্ডলীতে মঙ্গল দোষ রয়েছে, তারা এই দিনে বজরঙ্গবলীর পুজো করলে সেই দোষ দূর হয়। পৌরাণিক গাথা অনুসারে, জৈষ্ঠ্য মাসের বড় মঙ্গলবারেই ভগবান রাম এবং বজরংবলীর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল, যে কারণে এই মাসের সমস্ত মঙ্গলবারকে ‘বড় মঙ্গলবার’ বলা হয়।
বেদে মাংস ভক্ষণের সমর্থন নেই – প্রমাণসহ তথ্য !
হনুমানজিকে প্রসন্ন করার উপায়
হনুমানজিকে প্রসন্ন করার জন্য বড় মঙ্গলবার কিছু বিশেষ আচার-অনুষ্ঠান পালনের কথা বলা হয়েছে। এদিন ১১ বার হনুমান চালিশা পাঠ করা এবং হনুমানজির কপালে সিঁদুর পরানো অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এমনটা করলে জীবনের সমস্ত বাধা বিপত্তি দূর হয়। এছাড়াও, এই দিনে লাল রঙের কাপড়, মিষ্টি, মুসুর ডাল, মধু, গুড় এবং চানা গরীবদের মধ্যে বিতরণ করলে পুণ্য অর্জন হয়। অনেকে চামেলি ফুলের মালা তৈরি করে হনুমান মন্দিরে গিয়ে পুজোও দেন।
বজরঙ্গবলীর কৃপাধন্য ৪ রাশি , জ্যোতিষ মতে
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, কিছু নির্দিষ্ট রাশির জাতকদের উপর বজরঙ্গবলীর বিশেষ আশীর্বাদ সবসময় থাকে। এই শেষ বড় মঙ্গলবারে তাঁর কৃপায় এই রাশিগুলির ভাগ্যের চাকা ঘুরতে পারে:
মেষ রাশি: হনুমানজির প্রথম প্রিয় রাশি হলো মেষ। এই রাশির জাতকদের মঙ্গলবার উপবাস রাখা এবং যথাযথ আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হনুমানজির পূজা করা উচিত। হনুমানজি মেষ রাশির জাতকদের বুদ্ধিমত্তা এবং দক্ষতা প্রদান করেন, যার ফলে তারা অর্থসহ সমস্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পান।
সিংহ রাশি: সিংহ রাশির জাতকদের উপর হনুমানজির বিশেষ আশীর্বাদ থাকে। তাঁর কৃপায় সিংহ রাশির জাতকদের জীবনে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না এবং কেউ না কেউ সর্বদা তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। সিংহ রাশির জাতকরা যদি নিষ্ঠার সঙ্গে হনুমানজির পুজো এবং উপবাস করেন, তাহলে তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করতে পারেন।
কন্যা রাশি: কন্যা রাশির জাতকদের উপর হনুমানজির আশীর্বাদ সর্বদা বর্ষিত হয়। বজরঙ্গবলীর কৃপায় ভাগ্য সর্বদা কন্যা রাশির জাতকদের অনুকূলে থাকে, যার কারণে তারা ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে সর্বদা প্রতিপত্তি লাভ করেন। হনুমানজি কন্যা রাশির জাতকদের তাৎক্ষণিকভাবে সবচেয়ে বড় সমস্যা থেকে বের করে আনেন এবং সমস্ত বিপদ থেকেও দূরে রাখেন। এই রাশির কর্মজীবীরা অফিসে সর্বদা একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত হন।
বৃশ্চিক রাশি: বৃশ্চিক রাশির অধিপতি মঙ্গল এবং মঙ্গলের অধিপতি হনুমানজি, তাই বৃশ্চিক রাশির জাতকদের উপর সর্বদা হনুমানজির বিশেষ আশীর্বাদ থাকে। হনুমানজির কৃপায় বৃশ্চিক রাশির জাতকরা সবচেয়ে কঠিন কাজও সহজে করতে পারে এবং তাদের মধ্যে সাহসের অভাব থাকে না। তারা তাদের সমস্ত দায়িত্ব পালন করে এবং পরিবারের পূর্ণ যত্ন নেয়। হনুমানজির উপাসনা করলে বৃশ্চিক রাশির জাতকদের সুখ এবং সৌভাগ্য বৃদ্ধি পায়।
উপসংহার
বজরঙ্গবলীর কৃপায় এই ৪ রাশির জীবনে আসতে পারে নতুন দিগন্ত। নিষ্ঠা ও ভক্তির সাথে এই পবিত্র দিনে হনুমানজির আরাধনা করলে জীবনে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত।
জয় শ্রি রাম
