ব্যুরো নিউজ,১৫ জুলাই: না, তিনি ইরাকের রাষ্ট্রপ্রধান সাদ্দাম হোসেন নন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস টাওয়ারে বিমান হানাও দেননি। শুধুমাত্র জাল শোনার কারবার করতেন। সেই খবর পেয়ে তদন্ত নেমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলীতে গিয়ে পৌঁছয় পুলিশের একটি দল। হাতেনাতে সাদ্দামকে ধরেও ফেলে কিন্তু প্রতিবেশীদের পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ আর সাদ্দামের ভাই সাইরুল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুডলে সাদ্দাম সেই ফাঁকে পালিয়ে যায়।
কোনো সাইড এফেক্ট ছাড়াই নির্মূল হবে ব্রেন ক্যান্সার, দাবি IIT স্কলারের
জাল পেতেছিল বহুদূর পর্যন্ত
অভিযোগ সাদ্দাম সর্দার দীর্ঘদিন ধরেই জাল সোনার নানা ধরনের মূর্তি নিয়ে বাজারে সোনা বনে বেচার চেষ্টা করছিল। তার বাড়ি কুলতলীর জ্বালাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতে পয়তার হাটে। ভুয়ো সোনার মূর্তি দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সে প্রতারণা করতো। এই জাল ছড়িয়েছিল কুলতলী থেকে বহু দূর পর্যন্ত। খবর পেয়ে সোমবার সকাল সাতটায় পয়তার হাটের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ কর্মীরা। সাদা পোশাকে বাড়িতে ঢুকে সাদ্দামকে তারা হাতেনাতে ধরে ফেলে। এরপরেই আশপাশের মহিলারা পুলিশকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তখনই সাদ্দামের ভাই সাইরুল পুলিশকে নিশানা করে গুলি চালায়। অবশ্য গুলিতে কারো আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু সেই সুযোগে সাদ্দাম পুলিশের হাত ছাড়িয়ে গা ঢাকা দেয় । প্রথমে পুলিশ বাহিনী পিছু হটলেও পরে আরো বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে দফায় দফায় সাদ্দামের ওই গ্রামে হানা দেয়।। তল্লাশীর সময় দেখা যায় সাদ্দামের বাড়ির খাটের নিচে একটি সুরঙ্গ রয়েছে সেই সুরঙ্গ চলে গিয়েছে বাড়ির পেছনে একটি খালে। সেখান দিয়েই সাদ্দাম ও তার ভাই একটি ডিঙ্গি নৌকায় গা ঢাকা দেয় বলে জানা গেছে কিন্তু নৌকার খোঁজ পাওয়া যায়নি। সাদ্দাম ওই খাল পেরোলে অন্য থানার এলাকা বলে পুলিশের কিছু অসুবিধা হয়। ইটের তৈরি ওই সুরঙ্গে দেখা গেছে প্রায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে। আর খালেতে গিয়ে দেখা যায় সেটি মাতলা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। সাদ্দাম কেন এই ধরনের সুরঙ্গ তৈরি করল তা নিয়েই দ্বন্দ্বে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা ওই জাল সোনার কারবার বহুদিন ধরেই করছিল সাদ্দাম। এবং তার জাল পেতেছিল বহুদূর পর্যন্ত। আর গ্রেফতারের আগাম খবর পেয়ে সে তৈরি করেছিল সুরঙ্গ।
মন খারাপ?কয়েক মূহুর্তে আপনার মন ভালো করতে পারে হাতের মুঠোফোন
পুলিশ অবশ্য সাদ্দামের স্ত্রী মাসুদা ও সাইরুলের স্ত্রী রাবেয়াকে গ্রেফতার করেছে। তাদের গ্রেপ্তারের পরেই পাল্টা পুলিশের বিরুদ্ধে সাদ্দামের পরিবার অভিযোগ করে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। পুলিশ অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। জানা গেছে সাদ্দাম হোসেন ও তার প্রতারক বাহিনী বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি পিতলের তৈরি করে তাতে সোনার আবরণ অথবা পালিশ করে বিক্রির জন্য ঘুরে বেড়াতে বিভিন্ন ব্যবসায়ীকেও তারা টোপ দিত। খবর পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে জানা গেছে বহু ব্যবসায়ীকেই মারধর করে তাদের টাকা ছিনিয়ে নিতো সাদ্দাম ও তার দলবল। এই মূর্তি বিক্রি চক্রে গ্রামের বেশ কিছু পুরুষ মহিলাযুক্ত ছিল। তাদের অবশ্য সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর আগেই পুলিশের হাতে নানা অভিযোগে সাদ্দাম গ্রেপ্তার হয়েছিল পরে অবশ্য জামিন পেয়ে যায় আবার শুরু করে জাল সোনার মূর্তির কারবার। এখন প্রশ্ন সাদ্দামের এই জাল কতদূর বিস্তৃত কারাই বা এর সঙ্গে জড়িত। পুলিশ পুরো নেটওয়ার্কের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।