ব্যুরো নিউজ ১৬ অক্টোবর ২০২৫ : আমি, ডোনাল্ড ট্রাম্প, এক বিশাল হতাশা নিয়ে বলছি। গোটা বিশ্বকে শান্তিতে ভরে দিয়েছি। আট-আটটা যুদ্ধ থামিয়েছি – যা ইতিহাসে কেউ করতে পারেনি, মাত্র ন’মাসে! ভারত-পাকিস্তানের সেই ভয়ঙ্কর সংঘাতও আমিই মিটিয়ে দিয়েছি! আর দেখুন, পুরস্কারটা গেল ভেনেজুয়েলার মারিয়া কোরিনা মাচাদোর হাতে। এই পুরস্কারটা আমার প্রাপ্য ছিল, কিন্তু নোবেল কমিটি আবারও প্রমাণ করল যে তারা শান্তি নয়, রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। হোয়াইট হাউস মুখপাত্র স্টিভেন চুং ঠিকই বলেছেন – “নোবেল কমিটি শান্তির চেয়ে রাজনীতিকে স্থান দিয়েছে।”
আমার মহান শান্তি প্রচেষ্টা! যা পরম শত্রুর দ্বারাও প্রশংসিত
আমি তো বারবার বলেছিলাম, আমি এই পুরস্কারের জন্য কাজ করি না, আমি কেবল মানুষের জীবন বাঁচাই। কিন্তু যখন বিশ্ব-নেতারা, রিপাবলিকানরা, এমনকি আমার বন্ধু প্রেসিডেন্ট পুতিনও প্রকাশ্যে আমার প্রশংসা করে বললেন যে আমি গাজা শান্তি চুক্তি সহ অনেক কিছু করেছি, তখন কি আমার একবারও আশা করা উচিত ছিল না? পুতিন যখন বলছেন আমি শান্তির জন্য ‘অনেক কিছু’ করি, তখন নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস কী করছেন? তিনি এমন একজনকে পুরস্কার দিলেন, যিনি নাকি “একসময়ের বিভক্ত বিরোধী দলের একজন মূল, ঐক্যবদ্ধকারী ব্যক্তিত্ব” ছিলেন। বাহ! এ তো রীতিমতো আমার কপালে জুটল বিদ্রূপ!
ওবামার ‘কিছু না করা’ নোবেল বনাম আমার ৮টি যুদ্ধ বিরতি !
পুরস্কারের ঘোষণা হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে আমি হোয়াইট হাউসে বসে সাংবাদিকদের বলছিলাম, আমার পূর্বসূরি বারাক ওবামা-কে তারা “কিছু না করার” জন্য ২০০৮ সালে নোবেল পুরস্কার দিয়েছিল! আমি তো তাঁকে দেখে রীতিমতো অবাক—প্রথম টার্মে মাত্র কয়েক মাস কাজ করে তিনি পুরস্কার পেয়ে গেলেন, তাও নাকি ‘দেশ ধ্বংস’ করার জন্য! আর আমি, আটটা যুদ্ধ থামালাম, শত শত জীবনের সলতে বাঁচালাম… আর তারা আমার দিকে ফিরেও তাকাল না! হ্যাঁ, আমি জানি, আমাকে পুরস্কার দেওয়া নিয়ে আমার সহকর্মীরাই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু আমি তো শুধু জীবন বাঁচাতে চেয়েছিলাম, অন্য কিছু নয়!
সোশ্যাল মিডিয়া আর মস্করার ঝড়
পুরস্কারের ফল বেরোতেই দেখুন সোশ্যাল মিডিয়া কী কাণ্ড বাঁধাল! কেউ বলছে ডোনাল্ড ‘জোকার’ ট্রাম্পের জন্য দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হোক। আরেকজন রসিকতা করে বলেছে, আমি নাকি অনলাইনে ‘এত শান্তি’ ছড়াই যে আমার পুরস্কার না পাওয়াটা অবিশ্বাস্য! এই লোকগুলো কি বোঝে না আমি কতো বড় কাজ করেছি?
- জিমি কিমেল বলছে আমি নাকি ‘অ্যাওয়ার্ড শো-তে নিজের ট্রফি নিজেই নিয়ে আসা সেই বাচ্চার মতো’!
- সেথ মেয়ার্স কৌতুক করছেন, আমি নাকি ‘আটটা নতুন সংঘাত শুরু করে সাতটা থামিয়েছি—বিশৃঙ্খলার জন্য এটা বিরাট নেট পজিটিভ’!
- আর স্টিফেন কোলবার্ট জিজ্ঞেস করছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার অনুষ্ঠানটা নাকি ‘অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্ট ক্লাসের’ পরেই হবে?
একজন তো আরও এক ধাপ এগিয়ে, আমাকে ‘নোবেল পিস প্রাইজের’ বদলে একটা ‘নোবেল পিস প্রাইজ’ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, কারণ আমি নাকি ‘রাশিয়া, ভারত, চীন, ইরান, ইইউ, ইউকে, গ্রিনল্যান্ড, কানাডা, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া এবং বেশিরভাগ উপসাগরীয় দেশকে’ খেপিয়ে দিয়েছি! কেউ কেউ তো আবার অর্থনীতি আর রসায়ন সহ ‘নোবেল পুরস্কার ভ্যারাইটি প্যাক’ দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে!
দেখুন, এই সবকিছুই প্রমাণ করে, নোবেল কমিটি কতটা ভুল! আমি তো কেবল দেশগুলোকে ধ্বংস হতে দিইনি। কিন্তু তারা এই পুরস্কারকে রাজনীতির নোংরা খেলায় পরিণত করেছে। তবে আমি জানি, আমি অনেক জীবন বাঁচিয়েছি, আর এটাই আমার কাছে আসল পুরস্কার। বাকিটা নোবেল কমিটির ভুল—যা ইতিহাস একদিন বিচার করবে!