Trump Ishaq Dar counter claims

ব্যুরো নিউজ ২৭শে আগস্ট ২০২৫ : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সামরিক সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি নিয়ে বিতর্ক এখনো থামেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও দাবি করেছেন যে তার হস্তক্ষেপেই দুই দেশের মধ্যে একটি সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ থেমেছিল। তার এই দাবি ভারতের পক্ষ থেকে বারবার অস্বীকার করা হয়েছে। তবে এই বিতর্কের মধ্যে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দারের একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

ট্রাম্পের দাবি: ‘৭টি জেট ভূপাতিত, বাণিজ্যচুক্তি দিয়ে থামিয়েছি’

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ুং-এর সঙ্গে এক বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘পারমাণবিক যুদ্ধ’ শুরু হতে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, “তারা ইতিমধ্যেই ৭টি জেট ভূপাতিত করেছিল।” ট্রাম্প আরও দাবি করেন যে তিনি বাণিজ্যিক চাপ ব্যবহার করে এই সংঘাত থামিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি তাদের বলেছি, ‘তোমরা কি বাণিজ্য চাও, নাকি যুদ্ধ?’…যদি তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাও, আমি তোমাদের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য করব না।” ট্রাম্পের এই দাবি ভারতের পক্ষ থেকে সরাসরি নাকচ করা হয়েছে।
বাণিজ্য আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ট্রাম্পের দাবি সম্পূর্ণ ধাপ্পাবাজি। অন্তত ভারতের ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি অসম্ভব, আর তাই এটি কোনোভাবেই দাবি করা ‘যুদ্ধবিরতির’ অংশ হতে পারে না।


Operation Sindoor : রাজনৈতিক বাধাহীন দুর্ধর্ষ সামরিক প্রযুক্তির সাফল্য অপারেশন সিঁদুর , বায়ুসেনা প্রধানের বক্তব্যের ভিত্তিতে ফিরে দেখা !

ভারতের সামরিক প্রধানের  তথ্য : ১০টির অধিক

ট্রাম্পের ৭টি জেট ভূপাতিত করার দাবির কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আমার প্রীত সিং ‘অপারেশন সিন্দূর’-এর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে ভারতীয় বাহিনী অন্তত পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এবং একটি বড় নজরদারি বিমান ভূপাতিত করেছে। এছাড়াও ক্ষেপণাস্ত্র হানার ফলে , বিমান ঘাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা আরও গোটা পাঁচেক যুদ্ধবিমান নষ্ট হয়েছে – এদের মধ্যে বেশির ভাগ মার্কিনী এফ ১৬ , পাকিস্তানের জেএফ ১৭ এবং চীনের জে১০সি বিমান , মোট ক্ষতিগ্রস্থ বিমানসংখ্যা ১০।   IAF প্রধান আরও জানান, এই অভিযানের সাফল্য সম্ভব হয়েছিল ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা’ এবং তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের কারণে, যেখানে কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছিল না। তিনি বলেন, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অন্তত দুটি কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার, ছয়টি রাডার এবং দুটি সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম ধ্বংস করেছে।

 

পাকিস্তানের মন্ত্রীর স্বীকারোক্তি: ‘যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল পাকিস্তান’

এই বিতর্কের মাঝে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন, যা ট্রাম্পের দাবিকে সরাসরি মিথ্যা প্রমাণ করেছে। তিনি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে জানান যে যুদ্ধবিরতির জন্য ইসলামাবাদ কখনো যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে অনুরোধ করেনি। তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতির অনুরোধ পাকিস্তান থেকেই গেছিল”, কারণ ভারতীয় হামলার পর তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল। দার আরও বলেন, তারা কেবল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর কাছে তাদের যুদ্ধবিরতির অনুরোধটি পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন, মধ্যস্থতার জন্য নয়।

Operation Sindoor : ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভাঙল লস্করের মেরুদণ্ড ,সংসদ ও মুম্বাই হামলার মূল অর্থযোগানদাতা আব্দুল আজিজ নিহত


ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থান

পাকিস্তানের মন্ত্রীর এই স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও, ভারত তার দীর্ঘদিনের অবস্থানে অটল রয়েছে: “সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না।” ভারত সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, পাকিস্তান সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ না করা পর্যন্ত এবং সন্ত্রাসবাদের পরিকাঠামো ধ্বংস না করলে কোনো ধরনের আলোচনা সম্ভব নয়। এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সংসদের সামনে বলেছিলেন যে যুদ্ধবিরতি কেবল ভারতের শর্তেই হয়েছিল, কোনো বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়াই।

‘অপারেশন সিন্দূর’ শুরু হয়েছিল ২২ এপ্রিলের পাহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার জবাবে, যেখানে ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এই অভিযানের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানে এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ১০০-এর বেশি সন্ত্রাসীকে হত্যা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর