Qutub Minar Russian flag

ব্যুরো নিউজ ১৯ জুন : ১২ই জুন রাশিয়া দিবস উপলক্ষে কূটনৈতিক সৌহার্দ্যের এক প্রাণবন্ত প্রদর্শনীতে ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপত্য কুতুব মিনার রুশ পতাকার রঙে সেজে উঠেছিল। এই ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানটি লাল, নীল এবং সাদা রঙে ঝলমল করছিল, যা রুশ জাতীয় পতাকার প্রতীকী রঙ। এটি দর্শক এবং পথচারী উভয়েরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং প্রশংসিত হয়।

বর্ণিল আলোকসজ্জা: এক গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন

এই বর্ণিল আলোকসজ্জা শুধুমাত্র একটি চাক্ষুষ দৃশ্য ছিল না, এটি ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী ও পরীক্ষিত বন্ধুত্বের প্রতি এক উজ্জ্বল শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হিসেবে কাজ করেছে। অনুষ্ঠানের ফুটেজে দেখা গেছে, রাতের আকাশে বিশাল এই মিনারটি উজ্জ্বলভাবে জ্বলছে, যা কেবল আলো নয়, আন্তর্জাতিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ধারণাকেও প্রতিফলিত করছে।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে

ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক: ২৫ বছরের কৌশলগত অংশীদারিত্ব

উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ১৯৪৭ সাল থেকে কূটনৈতিক সম্পর্কের এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কয়েক দশক ধরে, দুই দেশের মধ্যে বন্ধন আরও শক্তিশালী হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর, ভারত প্রজাতন্ত্র এবং নবগঠিত রুশ ফেডারেশন ১৯৯১ সালে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পুনরায় নিশ্চিত ও আনুষ্ঠানিক রূপ দেয়। তারপর থেকে, বৈশ্বিক মঞ্চে উভয় দেশই একে অপরের পাশে নির্ভরযোগ্য অংশীদার এবং কৌশলগত মিত্র হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। এই বছর তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের ২৫তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে।

রাশিয়া দিবস উদযাপন: প্রধান অতিথি হিসেবে বিক্রম মিশ্রির উপস্থিতি

১২ই জুন, রাশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাশিয়ার দূতাবাস ভারতে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ভারতীয় সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য, বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলির রাষ্ট্রদূত এবং সামরিক অ্যাটাশে, সেইসাথে রাজনৈতিক, ব্যবসা, সামাজিক, ধর্মীয়, বৈজ্ঞানিক, সাংস্কৃতিক এবং গণমাধ্যম জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ভারতে বসবাসকারী রুশ নাগরিকরাও এই উদযাপনে যোগ দিয়েছিলেন।

স্বাগত ভাষণে ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভ বহু মেরু বিশ্ব ব্যবস্থার উত্থানের মধ্যে বিশ্বব্যাপী বিষয়ে রাশিয়ার ভূমিকার ধারাবাহিক উন্নতি, তার প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সার্বভৌমত্বের শক্তিশালীকরণ এবং ভারতের সাথে বন্ধুত্বের অটল প্রতিশ্রুতি ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের ব্যাপক উন্নয়নের ওপর জোর দেন, যার ২৫তম বার্ষিকী এই বছর পালিত হচ্ছে।

রাশিয়া দিবস: ইতিহাস ও তাৎপর্য

রাশিয়া দিবস, যা প্রতি বছর ১২ই জুন পালিত হয়, রুশ ফেডারেশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ছুটির দিন। এটি ১৯৯০ সালে রুশ সোভিয়েত ফেডারেটিভ সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক (RSFSR) এর রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ঘোষণা গ্রহণের ঐতিহাসিক মুহূর্তকে চিহ্নিত করে, যা সোভিয়েত ইউনিয়নের চূড়ান্ত বিলুপ্তির পর আধুনিক রাশিয়ার ভিত্তি স্থাপন করেছিল। এই দিনটি একটি নতুন, স্বাধীন রুশ রাষ্ট্রের জন্মকে প্রতীকী করে এবং দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জাতীয় গর্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে পালিত হয়। রাশিয়ার নাগরিকরা দেশজুড়ে দেশপ্রেমিক অনুষ্ঠান, কনসার্ট এবং জনসমাগমের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপন করে, যখন প্রধান ল্যান্ডমার্কগুলি জাতীয় ত্রিবর্ণে আলোকিত হয়।

‘দক্ষিণায় পাক অধিকৃত কাশ্মির চাই’: সেনাপ্রধানকে জগদ্গুরু রামভদ্রাচার্য্যের স্পষ্ট বার্তা

ঐতিহ্য ও বর্তমানের মেলবন্ধন: কুতুব মিনার কি ভবিষ্যতে এমন আরও উজ্জ্বল মুহূর্তের সাক্ষী হবে?

এই ঘটনা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে: কুতুব মিনার কি ভবিষ্যতে মানব সভ্যতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক ঘটনাগুলিকে তুলে ধরতে ব্যবহার করা হবে? সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবনটি একইভাবে আলোকিত করে কৌতূহল, সচেতনতা এবং পর্যটক আকর্ষণ করা হয়। ভারতে, ইতিহাসের একটি অংশকে একইভাবে ব্যবহার করে ঐতিহ্য এবং বর্তমানের সঙ্গে এর সংমিশ্রণকে তুলে ধরা যেতে পারে, যা নিঃসন্দেহে আরও বেশি সংখ্যক দর্শককে আকর্ষণ করবে এবং আন্তর্জাতিক বোঝাপড়াকে শক্তিশালী করবে। ধ্রুব স্তম্ভের এই ধরনের ব্যবহার ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে নতুন করে তুলে ধরার একটি অসাধারণ সুযোগ করে দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর