ব্যুরো নিউজ ২২ মে : ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর, বিজাপুর এবং দান্তেওয়াড়া জেলার ত্রি-জংশনে অবস্থিত অভুজমাড়ের ঘন জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনী এবং মাওবাদী বিদ্রোহীদের মধ্যে এক ভয়াবহ সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৭ জন নকশাল নিকেশ হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সিপিআই (মাওবাদী)-র শীর্ষ নেতা নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজুও রয়েছেন। এই ঘটনা মাওবাদ-বিরোধী অভিযানে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাসবরাজু: মাওবাদী আন্দোলনের মেরুদণ্ড

নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মতে, প্রায় ৭১ বছর বয়সী বাসবরাজু ছিলেন সিপিআই (মাওবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক এবং নকশাল আন্দোলনের মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত। ছত্তিশগড় সরকার তার মাথার জন্য ১ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, এছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং তেলেঙ্গানা সহ অন্যান্য রাজ্যও পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। বাসবরাজু ২০১৮ সালে গণপতির পদত্যাগের পর থেকে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি একাধিক বড়সড় হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন, যার মধ্যে ২০০৩ সালে তিরুপতিতে তৎকালীন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুকে লক্ষ্য করে আলিপিরি বোমা হামলা এবং ২০১০ সালে দান্তেওয়াড়ায় সিআরপিএফ-এর ৭৬ জন কর্মীকে হত্যা করা অ্যামবুশও উল্লেখযোগ্য। বাসবরাজু মূলত অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার বাসিন্দা ছিলেন এবং একজন প্রশিক্ষিত গেরিলা যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ ও নিষিদ্ধ পিপলস ওয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, যা পরে সিপিআই (মাওবাদী)-তে বিলীন হয়ে যায়।

‘অপারেশন সিঁদুর’ এর সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলে থাকছেন না ইউসুফ পাঠান, তৃণমূল সাংসদের সিদ্ধান্ত

অভিযান এবং ক্ষয়ক্ষতি

শীর্ষ মাওবাদী নেতাদের উপস্থিতির গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান শুরু করা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে ২৭টি মৃতদেহ এবং প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন। তিনি টুইট করে বলেন, “আমাদের বাহিনীর এই অসাধারণ সাফল্যের জন্য গর্বিত। আমাদের সরকার মাওবাদের হুমকি দূর করতে এবং আমাদের জনগণের জন্য শান্তি ও অগ্রগতির জীবন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই অভিযানকে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই প্রথম একজন মাওবাদী সাধারণ সম্পাদককে নিষ্ক্রিয় করা হলো। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, অপারেশন ব্ল্যাক ফরেস্টের পর ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্র জুড়ে ৫৪ জন মাওবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৮৪ জন আত্মসমর্পণ করেছে। শাহ ২০২৬ সালের ৩১শে মার্চের মধ্যে নকশালবাদ নির্মূল করার সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

কলকাতায় তিরঙ্গা যাত্রা ,বিএসএফ জওয়ান মুক্তি, ভুয়ো খবর দমন, সন্ত্রাসবাদ নিপাতন : মোদীর নেতৃত্বে দেশ সুরক্ষিত দাবি শুভেন্দু অধিকারীর

২০২৪ সালের চিত্র

২০২৪ সালে এ পর্যন্ত ছত্তিশগড়ে এনকাউন্টারে ২০০ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে, যার মধ্যে শুধু বস্তার ডিভিশনেই ১৮৩ জন রয়েছে। এটি নিরাপত্তা বাহিনীর মাওবাদ-বিরোধী অভিযানে ধারাবাহিক সাফল্যের ইঙ্গিত দেয়।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর