coochbehar LOP convoy attacked

ব্যুরো নিউজ ৬ আগস্ট ২০২৫ : মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতি তাঁর গাড়িবহর লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।শুভেন্দু অধিকারী এই হামলাকে “খুন করার চেষ্টা” বলে অভিহিত করেছেন এবং এর জন্য তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ ও পুলিশ সুপারকে সরাসরি দায়ী করেছেন।

হামলার ঘটনার বিবরণ

শুভেন্দু অধিকারী কোচবিহারে দলের নেতা-কর্মীদের উপর সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করছিলেন। এরপর তিনি ও অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা এই বিষয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে কোচবিহারের জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই তাঁর কনভয় আক্রমণের শিকার হয়। অবরোধকারীরা কালো পতাকা দেখায় এবং “গো ব্যাক” স্লোগান দিতে থাকে। আক্রান্ত গাড়ি থেকে তোলা ভিডিওতে দেখা যায়, একজন অবরোধকারী সেই গাড়িতে পাথর ছুঁড়ছে, যার ফলে গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। শুভেন্দু অধিকারীর মতে, তাঁর গাড়ির বুলেটপ্রুফ কাঁচ ভেঙেছে।

ধর্মীয় আক্রমণের অভিযোগ

হামলার ভিডিওতে একটি মসজিদও দেখা গেছে। শুভেন্দু অধিকারীর আশঙ্কা, খাগড়াবাড়ির মসজিদ থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে এবং এটিকে তিনি একটি “ধর্মীয় আক্রমণ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, এই হামলার পিছনে একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল। তার কাছে এমন একটি বৈঠকের প্রমাণ রয়েছে, যা আগের রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই বৈঠকে বিরোধী দলনেতার কনভয়ে হামলার পরিকল্পনা করা হয় বলে তিনি দাবি করেন।

অভিযুক্তদের তালিকা

শুভেন্দু অধিকারীর হাতে থাকা ভিডিও এবং প্রমাণ থেকে তিনি ৪১ জন সন্দেহভাজনের একটি তালিকা তৈরি করেছেন। এই তালিকায় তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ, ভিড়ের মধ্যে চিহ্নিত ১৯ জন মুসলিম ব্যক্তি এবং ২১ জন তৃণমূল কর্মীর নাম রয়েছে।

পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ

শুভেন্দু অধিকারী আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁর দলের আক্রান্ত সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেই অনুমতিকে উপেক্ষা করে এবং ভিআইপি কনভয়ের পথে জমায়েত হওয়া জনতাকে নিয়ন্ত্রণ বা থামাতে নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে এই হামলার সুযোগ করে দিয়েছে। তিনি পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যকে উদয়ন গুহের সঙ্গে এই হামলার পরোক্ষ আসামি বলে উল্লেখ করেছেন।

Suvendu Adhikari : মোদি সরকারের জনমুখী নীতি বাংলায় বিকৃত , পিছিয়ে পড়া হিন্দুদের অগ্রাধিকার হারানোর আশঙ্কা

তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া

হামলার ঘটনার পর, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তাদের কোনও কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তাদের দাবি, এটি বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফল। যদিও শুভেন্দু অধিকারী এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কোচবিহারের পুলিশ সুপার, উদয়ন গুহ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই আক্রমণ।”
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এসপি বলছে যে গাড়ি ভাঙচুর করেছে সে গ্রেফতার হয়েছে, আগে উদয়ন গুহকে গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ বিরোধী দলনেতাকে খুন করতে চেয়েছিল। এই খুনির সঙ্গে কোর্টে দেখা হবে।”
বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিকও বলেন, “কোচবিহারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক সমাজবিরোধী ছিল। আমাদের কাছে খবর ছিল যে এমন কিছু ঘটতে পারে। আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম। আমাদের গাড়ি অনেক জায়গায় থামানো হয়েছিল, কিন্তু পুলিশ কোনো সাহায্য করেনি।”

এই ঘটনা প্রমাণ করল যে রাজ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বাতাবরণে কোনও নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক কর্ম প্রণালী অসম্ভব ! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতার সাথে যোগাযোগ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে । আগামি দিনে এই ঘটনার বিষয় রাজ্যে আইন ও সুরক্ষায় ইতিবাচক পদক্ষেপের আশা করা হচ্ছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর