Sheikh Shahjahan

প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, ৬ মার্চ: গত এক যুগ তিনি নিজেকে ভেবেছিলেন, সম্রাট শাহজাহান। চারপাশটা সাজিয়েছিলেনও সেভাবেই।  মাথায় ঝাড়বাতি, একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি, চার পকেট বোঝাই টাকা, গায়ে সোনার গয়না। সবসময় চারপাশে লেঠেল বাহিনী। আর সর্বোপরি মাথার ওপর বাংলার দুই ক্ষনিকের রানী ও যুবরাজের হাত। অতএব তাকে দেখে কে?  সন্দেশখালি থেকে ন্যাজাট সব থানার সর্বত্রই পুলিশ তার অনুগত কর্মচারীর মত। অন্তত অত্যাচারিত গ্রামবাসীরা সে কথাই বলছেন।  ইডি কর্তাদের মাথা ফাটানোর পরও টানা ৫৩ দিন সাহস দেখিয়েছিলেন। বুকে বল ছিল, ‘দিদি আছে তো’। দিদিও বিধানসভায়  দাঁড়িরি সাফাই গেয়েছিলেন শাহজাহানের হয়ে। কিন্তু ৫৩ দিন পরে সেই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে শাহজাহান বুঝতে পেরেছিলেন তিনি সম্রাট শাহজাহান নন। পাড়ার চড়- থাপ্পড় খাওয়া মস্তান। মনে পড়েছিল বোধহয় ইটভাঁটায় শ্রমিকের কাজ করা আর গাড়ির ড্রাইভারি করা পুরনো জীবন। এখন মনের মধ্যে তোলপাড় হচ্ছে না জানি কখন কি হয়!

মোহভঙ্গ হতে পারে শাহজাহানের

তাপস রায়ের ‘বুকের পাটা’ আছে

Advertisement of Hill 2 Ocean

শাহজাহানের গ্রেফতারের পর তাকে ভুরিভোজ খাইয়ে রাখা হয়েছিল ভবানী ভবনে। সরকারের শীর্ষ নেতা ও দলের একনম্বর সাংসদের পেয়ারের শাহজাহানকে ভালো খাইয়ে আরামে রাখার দায় বর্তেছিল রাজ্য পুলিশের কর্তাদের ওপর। এমনকি সিবিআই-এর হাতেও দিতেও তাদের অসুবিধা। যুবরাজ বলেছিলেন কে শাহজাহান? আদালত ছাড় দিলে ২ মাসে গ্রেফতার করে দেব। কিন্তু রাজ্যবাসী দেখল তার ঠিক উল্টো ছবি। সিবিআই -এর আর্জির সঙ্গে সঙ্গেি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্য পুলিশ। রাজ্যের মানুষের করের টাকায় কেন বাঁচানো হবে অপরাধী শাহজাহানকে সে প্রশ্ন সবার মনে। বিরোধীরা সে কথাই বলে গলা ফাটাচ্ছেন। রাজ্যবাসীও তা সহজে গিলছে। রাজ্যের মহিলারাও ছিঃ ছিঃ করছে। কিন্তু, রাজ্য সরকারের কি এমন স্বার্থ আছে সন্দেশখালির পাতি গুন্ডাকে নিয়ে?  এখানেই সবাই বলছেন আসলে ডালমে কুছ কালা হ্যায়। এই স্বার্থের বিষয়টা সাধারণ নয়। তাই জন্যই এত তৎপরতা।

cbi-sheikh-shajahan

ইডি ও সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে বুধবার ৪ টে ১৫ -এর মধ্যে হাতে নেবে শাহজাহানকে। এমন নির্দেশের পরেও শাহজাহানকে বাঁচাতে মরণ-পণ চেষ্টা করছে রাজ্য পুলিশ। মেডিক্যাল টেস্টের নামে নিয়ে গিয়ে বুকে ব্যথার কারনে ‘কাকু’র মত হাসপাতালে রাখার ছক। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট তাকে থাকতে দিল না নির্বিঘ্নে ভবানিভবনে। লম্বা গাড়ির কনভয় নিয়ে পুলিশ, ইডি  ভবানিভবন থেকে যে ভাবে বেরোল তাতে মনে হল যেনও হল্লা চললেন যুদ্ধে। তবে যুদ্ধে নয়, কারাবাসের ঠিকানা নিয়েই এখন শাহজাহান চললেন অনিশ্চয়তার দেশে। কোথায় থাকবেন, কত দিন থাকবেন শেষ পর্যন্ত তিহারে কিনা, বালুর মত এক- দু মাসেই কেজি দশেক ওজন কমবে কিনা সে সব এখন মনে করছেন শাহজাহান। কতই না সাহস যোগাচ্ছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু, শাহজাহান বোধহয় বুঝছে ভালোই ছিলাম গাড়ির ড্রাইভারি করে।  ইটভাঁটায় কাজ করে বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম এখন আর তা হবে না। লেখা-পড়া কম। তাই কালিদাসের কথা মনে পড়ছে কিনা তা শাহজাহানই বলতে পারে। কিন্তু যে ডালে বসেছিল, সেই ডালটিই যে কেটেছে সেটা এখন বুঝেছে শাহজাহান।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর