matua community caa extended

ব্যুরো নিউজ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) আরও কঠোর করার পথে হাঁটছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি বিজ্ঞপ্তিতে সব রাজ্যকে ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, সিএএ-তে আবেদনের সময়সীমা ২০১৪ সাল থেকে বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে এবং পশ্চিমবঙ্গে একটি বড় ভোটব্যাংক, মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

 

নাগরিকত্বের আবেদনের সময়সীমা বৃদ্ধি এবং অনুপ্রবেশকারী আইন কঠোর

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে যে সকল হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে এসেছেন, তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই সময়সীমা বাড়ানোর ফলে এই সম্প্রদায়ের অনেকেই উপকৃত হবেন। তবে, কেন্দ্রীয় সরকার অনুপ্রবেশকারী আইনকে আরও কঠোর করছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে ডিটেনশন সেন্টার তৈরি করে বৈধ নথি ছাড়া আসা অনুপ্রবেশকারীদের সেখানে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না তাদের প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

Rakesh Singh BJP : ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার বিজেপির প্রতিবাদি নেতা রাকেশ সিং

মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্বেগ এবং রাজনৈতিক প্রভাব

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক শক্তি হল মতুয়া সম্প্রদায়, যারা মূলত নমঃশূদ্র বর্ণের একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী। রাজ্যে প্রায় ৩০% জনসংখ্যা মতুয়াদের এবং উত্তর ২৪ পরগণার মতো সীমান্ত জেলায় প্রায় ৩৮টি বিধানসভা আসনের ফলাফল নির্ধারণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) উভয়ই এই সম্প্রদায়ের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করে।
তবে, ভোটার যাচাইকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের কারণে এবং মতুয়াদের “প্রথম পরিবারে” মতবিরোধের ফলে এই সম্প্রদায়ের একটি অংশ বিজেপি এবং তৃণমূলের উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে। তারা মনে করে যে উভয় দলই তাদের কেবল একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতিতে, একটি অংশ কংগ্রেসের কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছেন। গত সপ্তাহে বিহারে রাহুল গান্ধীর যাত্রার সময় তারা তার সাথে দেখা করেন এবং তাদের দাবিগুলি তুলে ধরেন।

GST : স্বাস্থ্য ও জীবন বিমায় কোনো কর নয় , নেশাদ্রব্যে বর্ধিত কর ; কেন্দ্রের নতুন জিএসটি নীতি !

কেন কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছে মতুয়াদের একটি অংশ?

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানান, “মতুয়া সম্প্রদায়ের কিছু লোক আমার সঙ্গে দেখা করে, কারণ তারা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দল এবং দিল্লিতে ক্ষমতাসীন দল উভয়ের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে।” তিনি বলেন, মতুয়ারা মনে করছে তাদের মূল সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। রাহুল গান্ধী যেভাবে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন, তা দেখে তারা কংগ্রেসের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়েছে। তারা আশঙ্কা করছে যে বর্তমান পরিস্থিতি তাদের ভোটার তালিকায় নাম লেখানোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

বিজেপির পক্ষ থেকে সিএএ-তে সংশোধনী এনে মতুয়া শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, তৃণমূলের ‘ভুয়ো তথ্য’ প্রচার এবং বিজেপির পক্ষ থেকে এই আইনের সুবিধাগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থতার কারণে মতুয়াদের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। তবে, নির্বাচন কমিশনের আসন্ন এসআইআর (Special Intensive Revision) প্রক্রিয়ায় যদি মতুয়াদের ভোটদানের অধিকার নিশ্চিত করা যায়, তবে তা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর