brain

ব্যুরো নিউজ,৩১ মার্চ : কখনও কি মনে হয়েছে, মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন না? কাজ করছেন ঠিকই, কিন্তু ফলাফল আশানুরূপ আসছে না? চিন্তাশক্তি যেন ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে? এমন পরিস্থিতির পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই একে ‘ব্রেইন রট’ বলে উল্লেখ করছেন। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোনো স্বীকৃত সংজ্ঞা নেই, তবে আধুনিক সমাজে এই শব্দটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।২০২৪ সালে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ‘ব্রেইন রট’ শব্দটিকে ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করে। মূলত, অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার, তথ্যের অতিভার ও চিন্তাশক্তির চর্চার অভাবের ফলে বুদ্ধির ধার কমে যাওয়া এবং মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সমস্যাকে ‘ব্রেইন রট’ বলা হচ্ছে।

গরমের ছুটিতে কাশ্মীর ঘুরতে যাবেন ভাবছেন ! রইল ৭ দিনের ফাটাফাটি প্ল্যান

ব্রেইন রটের লক্ষণ

যাঁরা ব্রেইন রটের শিকার, তাঁদের মধ্যে সাধারণত নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি দেখা যেতে পারে—

  •  মনোযোগের অভাব ও একটানা কাজ করতে না পারা।
  • স্মৃতিশক্তির অবনতি ও ভুলে যাওয়ার প্রবণতা।
  •  সারাক্ষণ মানসিক ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভব করা।
  • নতুন কিছু শেখার বা সৃষ্টিশীল কাজে অনীহা।

গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়ার মতো সমস্যার সম্ভাবনাও বাড়তে পারে। তাই মস্তিষ্কের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ইমোশনাল ক্ল্যারিটির ভূমিকাঃ শরীরের প্রদাহ এবং বিষণ্নতার মধ্যে সম্পর্ক কি জানুন

কীভাবে ব্রেইন রট প্রতিরোধ করবেন?

১. স্ক্রিন টাইম কমান
অনেক সময় আমরা অনিয়ন্ত্রিতভাবে সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও স্ট্রিমিং বা মোবাইল গেমিং-এ ডুবে থাকি। এতে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে এবং এক ধরনের মানসিক ক্লান্তি তৈরি হয়। তাই দিনে সর্বোচ্চ ২-৩ ঘণ্টার বেশি স্ক্রিন টাইম না রাখাই ভালো। বই পড়া, হাঁটাহাঁটি বা শারীরিক ব্যায়ামের মতো অভ্যাস গড়ে তুলুন।

২. মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলুন
মস্তিষ্কও শরীরের অন্য পেশির মতোই, যদি নিয়মিত ব্যবহার না করা হয়, তবে তা কর্মক্ষমতা হারায়। তাই ধাঁধা সমাধান, দাবা খেলা, নতুন ভাষা শেখা বা সৃজনশীল কাজে নিজেকে যুক্ত রাখুন। এতে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বাড়বে।

৩. শরীরচর্চা করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, যা অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে সহায়ক। ফলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং মানসিক ক্লান্তি দূর হয়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

৪. পুষ্টিকর খাবার খান
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যতালিকায় রাখুন—

  • সবুজ শাকসবজি (যেমন পালং শাক)।
  •  বাদাম ও দানা শস্য, যা স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস।
  •  ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার (যেমন মাছ ও চিয়া সিডস)।
  • ব্লুবেরি ও আঙুরের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল।

রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন দিলিপের

৫. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিন
ঘুমের সময় মস্তিষ্ক পুনরুজ্জীবিত হয় এবং তথ্য সংরক্ষণ করে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং মনোযোগ কমে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

ব্রেইন রট মূলত আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা ও প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট সমস্যা। তবে কিছু সাধারণ অভ্যাস পরিবর্তন করে সহজেই এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই, নিজেকে সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখুন, প্রযুক্তির প্রতি নির্ভরশীলতা কমান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তবেই আপনার মস্তিষ্ক সচল ও সক্রিয় থাকবে।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর