ব্যুরো নিউজ, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ : মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মারা যান। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনিসহ নানা দীর্ঘস্থায়ী রোগে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন। তার চিকিৎসায় নিয়োজিত বোর্ড তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিলেও শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি।
রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ২০১৫ সালে তাঁর সাথে কাটানো মুহূর্তের কথা স্মরণ করে মোদী বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।” পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর মৃত্যুতে শোক বার্তা পাঠিয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনাস তাঁকে জাতির এক “অভিভাবক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
Bangladesh BNP : বিশাল জনসমর্থন নিয়ে রাজপথে তারেক রহমান: ১৭ বছর পর দেশে ফিরে প্রথম কর্মসূচি
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ও দলের ভবিষ্যৎ
বেগম জিয়ার প্রয়াণের মাত্র কয়েকদিন আগে গত ২৫ ডিসেম্বর ১৭ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন তাঁর বড় ছেলে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের এই সন্ধিক্ষণে তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং দলের হাল ধরাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারেক রহমান এখন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর বাবা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন এবং মা খালেদা জিয়া তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই উত্তরাধিকার এবং তারেক রহমানের বর্তমান ভূমিকা আগামী নির্বাচনে বিএনপির জন্য সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
Bangladesh : সাম্প্রদায়িক কট্টরপন্থার কবলে বাংলাদেশ: দীপু দাসের পর এবার অমৃত মণ্ডলকে পিটিয়ে হত্যা
আইনি চড়াই-উতরাই ও মুক্তি
২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০২০ সালে শেখ হাসিনা সরকার শর্তসাপেক্ষে তাঁর সাজা স্থগিত করে তাঁকে বাসায় থাকার অনুমতি দেয়। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি সম্পূর্ণ মুক্তি পান এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাঁকে সকল মামলা থেকে খালাস প্রদান করেন।



















