ব্যুরো নিউজ ১১ নভেম্বর ২০২৫ : বিহার বিধানসভা নির্বাচন দুই দফায় শেষ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন (ECI) ভোটদানের যে চূড়ান্ত পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তা এক ইতিহাস তৈরি করেছে। পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিহারে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটদানের হার দাঁড়িয়েছে ৬৬.৯১ শতাংশ। এটি ১৯৫১ সালের পর রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বাধিক ভোটদানের রেকর্ড।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (CEC) জ্ঞানেশ কুমার এই বিপুল অংশগ্রহণকে গণতন্ত্রের প্রতি ভোটারদের পূর্ণ আস্থার প্রতীক বলে প্রশংসা করেছেন।
নারী ভোটারদের অভূতপূর্ব অংশগ্রহণ
পরিসংখ্যানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া নারী ভোটারদের পুরুষদের চেয়ে বেশি ভোট দেওয়ার প্রবণতা এবার সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছে।
- নারী ভোটারের হার: ৭১.৬ শতাংশ (এটিই সর্বকালীন রেকর্ড)
- পুরুষ ভোটারের হার: ৬২.৮ শতাংশ
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার নারী ভোটারদের এই বিপুল অংশগ্রহণের বিশেষ প্রশংসা করে বলেছেন, “আজ ভোটাররা স্বাধীন ভারতে ইতিহাস তৈরি করেছেন। ১৯৫১ সাল থেকে হওয়া সমস্ত নির্বাচনের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ, প্রায় ৬৬.৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। মহিলারা নির্বাচন কমিশনের ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রেখেছেন, যার ফলে তাঁদের ভোটদানের হার ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে। বিহারের এই স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সারা দেশকে একটি শিক্ষা দিল।”
দুই দফার ভোটচিত্র
নির্বাচনটি হয়েছিল ৬ নভেম্বর (প্রথম দফা) এবং ১১ নভেম্বর (দ্বিতীয় দফা)। দুটি দফাতেই ভোটদানের হার খুব উৎসাহব্যঞ্জক ছিল:
| দফার বিবরণ | মোট ভোটদানের হার | নারী ভোটারের হার | পুরুষ ভোটারের হার |
| প্রথম দফা (৬ নভেম্বর) | ৬৫.০৮ শতাংশ | ৬৯.০৪ শতাংশ | ৬১.৫৬ শতাংশ |
| দ্বিতীয় দফা (১১ নভেম্বর) | ৬৮.৭৫ শতাংশ | ৭৪.০৩ শতাংশ | ৬৪.১ শতাংশ |
দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি আসনে ভোট নেওয়া হয়, যেখানে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এই দফায় কাটিহারে সবচেয়ে বেশি (৭৮.৮৩ শতাংশ) এবং নওয়াদায় সবচেয়ে কম (৫৭.৮৫ শতাংশ) ভোট পড়েছে। এই দফায় নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন পশ্চিম চম্পারণ, পূর্ব চম্পারণ, সীতামঢ়ী, মধুবনী, সুপৌল, অরিয়া ও কিষাণগঞ্জ জেলার মতো এলাকাগুলিতেও ভোট হয়।
Bihar : বিহারে প্রথম পর্বের ভোটগ্রহণ চলছে: ইভিএম-এ ৩.৭৫ কোটি ভোটারের রায়
নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টা ও ব্যবস্থাপনা
জ্ঞানেশ কুমার, ডাঃ সুখবীর সিং সন্ধু ও ডাঃ বিবেক যোশী-সহ নির্বাচন কমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ৪৫,৩৯৯টি ভোটকেন্দ্রে ওয়েবকাস্টিংয়ের মাধ্যমে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেছেন।
সিইসি কুমার এই নির্বাচনকে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে আরও বলেছেন যে, কমিশনের বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধনী প্রক্রিয়ায় (SIR) সাড়ে ৭ কোটিরও বেশি ভোটার অংশ নিয়েছেন। তিনি জানান, “নির্বাচন কর্মীদের নিরলস ও স্বচ্ছ প্রচেষ্টার কারণে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে বিহারের ৩৮টি জেলাশাসকের কাছে একটিও আপিল জমা পড়েনি।”
মোট ২৪৩টি বিধানসভা আসনের ভোট গণনা শুরু হবে আগামী ১৪ নভেম্বর সকাল ৮টা থেকে। আশা করা হচ্ছে, ওই দিনই ফল ঘোষণা করা হবে।



















