ব্যুরো নিউজ,১৯ এপ্রিলঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছিল ভারত ও চিন। এবার, চিন ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে উদ্যোগী হয়েছে। চিনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং জানিয়েছেন, চিন আগামী দিনে ভারতীয় পণ্য আমদানি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এদিকে, গত বছরের রাশিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের বৈঠকের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। ফেইহং তাঁর বক্তব্যে জানান, ‘চিনের বাজারের জন্য উপযুক্ত ভারতীয় পণ্য’ আরও বেশি পরিমাণে আমদানি করা হবে। তিনি বলেন, “চিন এবং ভারত যে কোনও ধরনের আধিপত্যকামী শুল্কনীতি বা পণ্যসুরক্ষা নীতির বিরুদ্ধে।” এর আগে, চিনের রাষ্ট্রদূত ইউ জিং ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে ঐক্য গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
মমতার খামে রাজনৈতিক কৌশল? দিলীপের দরজায় পৌঁছল নবান্ন!
ভারত-চিন বাণিজ্য ঘাটতি ও চ্যালেঞ্জ
তবে, ভারত ও চিনের বাণিজ্যিক সম্পর্কের বাস্তবতা অন্য দিকেও রয়েছে। কয়েকটি বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ভারতের চিনে রফতানি বৃদ্ধির পরিমাণ যতটা হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি। উল্টো, চিন থেকে ভারতীয় পণ্য আমদানির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। ২০২২ সালে ভারতের চিনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৯৯২০ কোটি ডলার, যা প্রায় সাড়ে আট লক্ষ কোটি টাকার সমান।
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (জিটিআরআই) নামক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরামর্শদাতা সংস্থা গত বছরে এক রিপোর্টে জানিয়েছিল, চিনের কড়া নিয়ন্ত্রণ বিধি এবং অভ্যন্তরীণ বাজারের সুরক্ষা বিধির কারণে ভারত রফতানি বাড়াতে পারছে না। চিনে পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক, কঠিন নিয়ন্ত্রণ বিধি এবং অভ্যন্তরীণ বাজারের সুরক্ষা নীতির কারণে অনেক ভারতীয় পণ্য চিনে প্রবেশ করতে পারছে না। এছাড়া, চিনে ভারতীয় রফতানি সংস্থাগুলোর নথিভুক্তি প্রক্রিয়া অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। এটি সম্পন্ন করতে সাধারণত দু’-তিন বছর লাগে এবং রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কড়া পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। একটি ব্যাচে সমস্যা হলে রফতানির নথিভুক্তি বাতিল হওয়ারও ঝুঁকি থাকে।
রাজ্যপালের সফরের আগে প্রশাসনের ‘তৎপরতা’: বাস্তব নাকি রাজনীতি?
এদিকে, চিনের আমেরিকার চাপের কারণে ভারতীয় পণ্য আমদানির ওপর কিছুটা শিথিলতা আনা হতে পারে। এর মাধ্যমে, চিন ভারতীয় পণ্যকে আরও বেশি পরিমাণে গ্রহণ করবে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ফেইহং। তিনি জানান, চলতি বছরে শাংহাই কো-অপারেশন শীর্ষবৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়া, সীমান্ত সমস্যার সমাধানে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নতুন সম্পর্কের সূচনা হলে।