ব্যুরো নিউজ ২৬ মে : ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (NMC)-এর অ্যাসেসর এক বরিষ্ঠ চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (CBI)। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান, ড. তপন কুমার জানা, ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় হাতে-নাতে ধরা পড়েছেন বলে জানা গেছে। কর্ণাটকের বেলগাভি-ভিত্তিক একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের অনুকূলে পরিদর্শনের রিপোর্ট দেওয়ার জন্য এই ঘুষ নেওয়া হচ্ছিল।
ঘুষের অভিযোগ এবং CBI-এর অভিযান
CBI সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মে (২০২৫) ড. তপন কুমার জানা, দু’জন বেসরকারি ব্যক্তি এবং কর্ণাটকের বেলগাভি-ভিত্তিক সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে যে, NMC-এর অ্যাসেসর হিসেবে ড. জানা ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে তাদের ইনস্টিটিউটের অনুকূলে পরিদর্শনের রিপোর্ট ইস্যু করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন।
এই তথ্যের ভিত্তিতে CBI একটি ফাঁদ পাতে এবং রবিবার ড. তপন কুমার জানাকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করার সময় হাতে-নাতে গ্রেফতার করে। তাঁর গ্রেফতারের পরপরই, CBI কলকাতা, বর্ধমান এবং বেলগাভি-সহ একাধিক স্থানে তল্লাশি অভিযান চালায়।
বিপুল নগদ উদ্ধার ও অন্যান্য নথি জব্দ
এই তল্লাশি অভিযানে অতিরিক্ত ৪৪.৬ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করা হয়, যা পূর্বে গৃহীত ১০ লক্ষ টাকার সাথে যোগ হয়ে মোট বাজেয়াপ্ত অর্থের পরিমাণ ৫৪.৬ লক্ষ টাকায় পৌঁছেছে। এছাড়াও, এই অভিযানে বেশ কিছু আপত্তিকর নথি ও অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
CBI এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “২৪.০৫.২০২৫ তারিখে CBI একটি মামলা দায়ের করেছে অভিযুক্ত সিনিয়র ডাক্তার, দুই বেসরকারি ব্যক্তি এবং কর্ণাটকের বেলগাভি-ভিত্তিক একটি বেসরকারি মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল যে, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (NMC) অ্যাসেসর হিসেবে কর্মরত অভিযুক্ত সিনিয়র ডাক্তার তাদের ইনস্টিটিউটের অনুকূলে পরিদর্শনের রিপোর্ট ইস্যু করার বিনিময়ে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন।”
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রানজিট রিমান্ডে
বর্ধমানের মিঠাপুকুরে ড. জানার বাসভবনে শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে রবিবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ম্যারাথন তল্লাশি চালায় CBI। তাঁর স্ত্রী সুস্মিতা জানা, যিনি নিজেও একজন চিকিৎসক, সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, তাকে বাজেয়াপ্ত জিনিসপত্র সম্পর্কে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন যে, তিনি জানতেন না তাঁর স্বামী NMC-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ড. তপন কুমার জানাকে ট্রানজিট রিমান্ডে কর্ণাটকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। তাঁকে সংশ্লিষ্ট আদালতে পেশ করা হবে বলে CBI জানিয়েছে। এই ঘটনার ফলে চিকিৎসা শিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে দুর্নীতির যোগসূত্র নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে।