ব্যুরো নিউজ,২৫ সেপ্টেম্বর:১৯৪৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর চালু হওয়া বসুশ্রী সিনেমা হল বাঙালির আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এক হাজার দর্শক আসন বিশিষ্ট এই প্রেক্ষাগৃহের ইতিহাস সুগভীর ও সমৃদ্ধ। এখানে উদয়শঙ্করের ‘কল্পনা’ এবং এমএস শুভলক্ষ্মীর ‘মীরা’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় বসুশ্রীর যাত্রা। ১৯৫৫ সালে এখানেই প্রথম মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’। অমিতাভ বচ্চনের ‘দো আনজানে’ ছবির শুটিংও হয়েছে এই হলেই।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা নতুন অভিযোগঃচিকিৎসককে খুনের জন্য হুমকি?
কিংবদন্তি শিল্পীরা এখানে পারফর্ম করেছেন
বসুশ্রী শুধু সিনেমার জন্য নয়, বরং সঙ্গীত, যন্ত্রসঙ্গীত এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোর জন্যও সুপরিচিত। কিন্তু বর্তমানে এই প্রেক্ষাগৃহের মালিকানা হস্তান্তরের সম্ভাবনা শোনা যাচ্ছে। একসময় উদয়শঙ্কর, রবিশঙ্কর, মান্না দে, এবং কিশোর কুমারের মতো কিংবদন্তি শিল্পীরা এখানে পারফর্ম করেছেন। কিন্তু দর্শক সংখ্যা কমে যাওয়ায় মালিকদের লোকসানের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।বসুশ্রীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যভূষণ বসু এবং ইন্দ্রভূষণ বসুর বিনিয়োগে এটি গড়ে ওঠে। বর্তমানে বসুশ্রীর মালিকদের মধ্যে কিছু সদস্য হলটি বিক্রি করার কথা ভাবছেন।কিন্তু সৌরভ বসু, যিনি বসু পরিবারের সদস্য, তিনি চান না সিনামা হলটি বিক্রি হোক। তিনি বলেন, “বসুশ্রীর সঙ্গে অনেক ইতিহাস জড়িত, আমরা এটিকে বিক্রি করতে চাই না।”
চক্ররেলের সমস্যা বাড়ছে বেআইনি দখলদারি ও নিকাশির দুর্ভোগ নিয়ে
অন্যদিকে, বসু পরিবারের এক সদস্য জানান, টিকিট বিক্রি এবং দোকান ভাড়া দিয়ে খরচ উঠছে না। এখন মাল্টিপ্লেক্সের যুগ, এবং বসুশ্রীকে অত্যাধুনিক করতে অনেক টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, যা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।অভিনেতা ও নাট্যকর্মী কৌশিক সেনও মন্তব্য করেছেন, “দর্শকরা যদি সিনেমা হলে বেসিক কমফর্ট না-পান, তবে সিনেমা হল বাচিয়ে রাখা মুশকিল। স্মৃতি আঁকড়ে থেকে কোনও লাভ হয় না।”ফলে অনেকেই মনে করছেন একটি ঐতিহ্যবাহী প্রেক্ষাগৃহের স্বর্ণালী অধ্যায়ের অবসান হতে চলেছে। জনসাধারণের আবেগ ও ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই হলটি কি হারিয়ে যাবে? ভবিষ্যৎই জানাবে।