ব্যুরো নিউজ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : মঙ্গলবার দত্তপুকুর এলাকায় এক আইনজীবীর উপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে বারাসত আদালত চত্বর। আইনজীবীদের এই বিক্ষোভের জেরে সেখানে এক পুলিশকর্মী ও এক সাংবাদিক আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মাথা ও মুখ ফেটেছে এবং তারা রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন। যদিও আইনজীবীদের পক্ষ থেকে এই হামলার দায় অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে যে, তাদের মধ্যে থেকেই কেউ কেউ আহত হয়েছেন এবং শাসক দলের দুষ্কৃতীরাই এই হামলার জন্য দায়ী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। দত্তপুকুর থানার বামনগাছি রিজেন্ট পার্ক এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে আইনজীবী দুলাল সরকারসহ তিন আইনজীবীর সঙ্গে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির বচসা হয়। আইনজীবীদের অভিযোগ, এই ব্যক্তিরা শাসক দল ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতী এবং তারাই তাদের উপর হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় খোকন মণ্ডল-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে।
বুধবার তাদের বারাসত আদালতে হাজির করা হলে আইনজীবীরা প্রতিবাদ জানান, কারণ মূল অভিযুক্ত খোকন মণ্ডলকে সেখানে আনা হয়নি। এর পর আদালত চত্বরে উত্তেজনা শুরু হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ এলে আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে।
পুলিশ ও সাংবাদিকের উপর হামলা
আদালতের নির্দেশে পুলিশ যখন বিকেলে মূল অভিযুক্ত খোকন মণ্ডলকে আদালতে হাজির করে, তখন আইনজীবীরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়, যার ফলে একজন পুলিশকর্মী রক্তাক্ত হন। একই সময়ে সেখানে উপস্থিত একজন সাংবাদিকও আক্রান্ত হন। পরে আইনজীবীরাই আহত পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যান বলে জানা যায়।
তবে বারাসত আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি অলোক সমাজপতি জানান, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তিনি দেখেননি কীভাবে পুলিশকর্মী আহত হলেন, তবে তিনি যখন রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশকর্মীকে দেখেন, তখন তাকে উদ্ধার করেন। সাংবাদিকদের উপর হামলার অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন।
আইনজীবীদের পালটা অভিযোগ
ঘটনায় আক্রান্ত আইনজীবী দেবাশিস সরকার, যিনি আহত আইনজীবী দুলাল সরকারের ভাই, তিনি এই হামলার জন্য শাসক দলের দুষ্কৃতীদের দায়ী করেছেন। তার দাবি, আইনজীবীরা এমন কাজ করতে পারেন না এবং বাইরের কেউ ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পুলিশকর্মীকে আঘাত করেছে। তিনি আরও বলেন যে, মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার তার দাদা ও পরিবারের আরও দুই সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এই ঘটনা সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশিষ্টজনরা মনে করেন, আইনজীবীদের এমন আচরণ কখনোই কাম্য নয়।