ব্যুরো নিউজ ১০ জুন : রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কের বর্তমান চিত্র কার্যত হতাশাজনক। প্রায় ১৪০ কোটি টাকা খরচ করে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হলেও, প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই পিচ উঠে গিয়ে, খানাখন্দে ভরে উঠেছে রাস্তার একাধিক অংশ। রাইপুর ও সারেঙ্গা ব্লক এলাকাগুলোতে এমন চিত্র বেশি করে ধরা পড়ছে, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে এবং প্রশ্ন উঠছে—এই বিপুল অর্থ খরচ সত্ত্বেও রাস্তাঘাটের এমন করুণ অবস্থা কেন?
ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও ঠিকাদার সংস্থাগুলি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সব কাজই নিয়ম মেনে হয়েছে। তবে বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। কোথাও পিচ উঠে গিয়েছে, কোথাও আবার তৈরি হওয়ার পরপরই রাস্তা বসে গিয়েছে। ফলে বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
এই প্রকল্পের কাজ পূর্তদপ্তরের বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। পূর্তদপ্তরের দাবি, রাস্তার কাজ এখনও তাদের হাতে হস্তান্তর হয়নি। তবে তিনটি জায়গায় ক্ষতির কথা স্বীকার করে দপ্তর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রকল্পে টেন্ডার ছাড় না দিয়েই বরাত দেওয়া একটি বড় প্রশ্নচিহ্নের জন্ম দিয়েছে। সাধারণত কমদামে কাজ করার প্রক্রিয়াই টেন্ডারে প্রাধান্য পায়। সেই পদ্ধতি অবলম্বন না করেই বরাত দেওয়ার পেছনে অন্য কোনো স্বার্থ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
লস অ্যাঞ্জেলসে অভিবাসন নীতি ঘিরে তীব্র সংঘাত: রাজপথে বিক্ষোভ-অশান্তি, সেনার হস্তক্ষেপ!
এই দীর্ঘ সড়ক প্রকল্প দু’টি ভাগে বিভক্ত—বাঁকুড়া ডিভিশনের আওতায় ৩৫ কিমি এবং বিষ্ণুপুর ডিভিশনের অধীনে ৩২ কিমি। প্রথমটির জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৬৬ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয়টির জন্য ৭০ কোটিরও বেশি। এমন একটি বড় প্রকল্পের মান নিয়ন্ত্রণে ঘাটতি থাকায় সাধারণ মানুষের কর ও ভরসা, উভয়ই বিফলে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ও নিত্যযাত্রীরা দ্রুত রাস্তার সংস্কার ও মান যাচাইয়ের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, একদিকে রাস্তার কাজ চলছে, অন্যদিকে পিচের ওপরেই কালভার্ট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, যা রাস্তাকে আরও দুর্বল করে তুলছে। এই অব্যবস্থা বন্ধে এবং ভবিষ্যতের জন্য স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে তদন্ত ও জবাবদিহি প্রয়োজন।