ব্যুরো নিউজ, ২৪ এপ্রিল: এবার কলকাতা হাইকোর্টের করা হুঁশিয়ারির মুখে রাজ্যের মুখ্যসচিব বি পি গোপালিকা। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই সমস্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য মুখ্য সচিবের কি অবস্থান তা জানানোর জন্য শেষবারের মতো সময় দিল আদালত। উল্লেখ্য এর আগে তিনবার মুখ্যসচিবের কাছে অবস্থান জানতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই আদালতের নির্দেশিকা এড়িয়েছেন মুখ্যসচিব।এবার চতুর্থ বারের মতো তাকে সময় দিল আদালত। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি মুখ্যসচিবকে আগামী ২ মে-এর মধ্যে তার অবস্থান স্পষ্ট করে জানাতে বলেছে। এই দিনও যদি মুখ্যসচিব তার অবস্থান স্পষ্ট না করেন তাহলে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে বলে হুঁশিয়ারি আদালতের।
একের পর এক হুঁশিয়ারি, তৃণমূল সরকারকে এফোঁড়-ওফোঁড় অমিত শাহর
প্রভাবশালীদের বাঁচাতেই কি সাঁড়াশি চাপে মুখ্যসচিব?কলকাতা হাইকোর্টের কড়া হুঁশিয়ারির মুখে মুখ্যসচিব
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুবীরেশ ভট্টাচার্য-সহ শিক্ষা দপ্তরের কয়েকজন প্রাক্তন আধিকারিকের জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সিবিআই এর অভিযোগ ছিল মুখ্য সচিবের তরফে অনুমতি না মেলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ার শুরু করা যাচ্ছে না। মুখ্যসচিবের অবস্থান জানতে চাইলেও, তিনি প্রতিবারই তা এড়িয়ে গিয়েছেন। যদিও এদিন রাজ্যের তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, যেহেতু এখন লোকসভা নির্বাচন চলছে, নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত থাকার দরুণ মুখ্য সচিব জবাব দিতে পারেননি। এরপরই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়া মসৃণভাবে চলছে কি না, সেটা দেখা আদালতের কাজ। যদি দেখা যায় সেখানে কোনও বাধা আসছে, তবে তা সরানোর কাজ করতে হবে।’
ভোটের সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই। মুখ্যসচিব এই মামলার গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও জানান বিচারপতি। এরপরই বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘এই দুর্নীতির শিকড় অনেক গভীরে রয়েছে এবং অনেক উচ্চপদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বিচার প্রক্রিয়া শুরুর অনুমতি নিয়ে মুখ্যসচিবকে রাজ্যের অবস্থান ২ মে’র মধ্যে জানাতে হবে। এটা মুখ্যসচিবকে শেষবারের মতোই বলা হচ্ছে। এবারও যদি তিনি তাঁর অবস্থান না জানান, তাহলে আদালতই তাঁর মতো পদক্ষেপ করবে।’ একদিকে সোমবারের কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে যেমন ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য, তেমনি মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে আদালতের এই কড়া হুঁশিয়ারি রাজ্যের জন্য সাঁড়াশি আক্রমণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে প্রভাবশালীদের বাঁচাতেই কি মুখ্যসচিব বারবার আদালতের জবাব এড়াচ্ছেন?