ব্যুরো নিউজ ২৯ মে : আসাম রাজ্য মন্ত্রিসভা প্রত্যন্ত, ঝুঁকিপূর্ণ এবং সীমান্ত অঞ্চলের যোগ্য বাসিন্দাদের জন্য অস্ত্র লাইসেন্স ইস্যু করার অনুমোদন দিয়েছে। ২৮শে মে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো, যেখানে রাজ্য বাহিনী সবসময় সহজে পৌঁছাতে পারে না, সেইসব অঞ্চলে আদিবাসী সম্প্রদায়কে সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা দেওয়া।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ও সিদ্ধান্তের কারণ
গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী শর্মা আসামের ভৌগোলিক সংবেদনশীলতা এবং এর জটিল নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের উপর জোর দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আসাম একটি কঠিন ও সংবেদনশীল রাজ্য।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা প্রত্যন্ত, ঝুঁকিপূর্ণ এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী যোগ্য ব্যক্তিদের অস্ত্র লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আদিবাসী বাসিন্দা এবং মূল ভারতীয় নাগরিকদের অস্ত্র আইন অনুযায়ী অস্ত্র লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে উৎসাহিত করব।”
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
বৃহত্তর নিরাপত্তা কৌশল এবং ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট
এই উদ্যোগটি সরকারের বৃহত্তর নিরাপত্তা কৌশলের একটি অংশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের সাথে আসামের দীর্ঘ এবং অরক্ষিত আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং মিয়ানমার ও ভুটানের কাছাকাছি অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা—বিশেষ করে নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ এবং মেঘালয়ের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো—বছরের পর বছর ধরে পর্যায়ক্রমিক অস্থিরতা, অনুপ্রবেশকারী কার্যকলাপ এবং জাতিগত উত্তেজনা প্রত্যক্ষ করেছে। এই এলাকার অনেক বাসিন্দা, বিশেষ করে পাহাড়ী জেলা এবং নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে, প্রায়শই অরক্ষিত বা কম পুলিশি ব্যবস্থার অভিযোগ করেন।
উদ্দেশ্য: সামরিকীকরণ নয়, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন যে এই পদক্ষেপ বেসামরিক জনগণকে সামরিকীকৃত করার উদ্দেশ্যে নয়, বরং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তা এবং আত্মবিশ্বাসের অনুভূতি জাগিয়ে তোলার জন্য। শর্মা বলেন, “এই পদক্ষেপ এমন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সাহায্য করবে যারা বারবার হুমকির শিকার হয়, কখনও কখনও অনুপ্রবেশকারী গোষ্ঠী বা আন্তঃসীমান্ত অপরাধী উপাদানের কাছ থেকে।” তিনি এটিকে একটি সক্রিয় এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বর্ণনা করেন।
আবেদন প্রক্রিয়া ও নির্দেশিকা
সরকার আগামী দিনে ব্যাপক নির্দেশিকা জারি করবে, যেখানে বাসিন্দারা কীভাবে আবেদন করতে পারবেন, যোগ্যতার মানদণ্ড এবং অপব্যবহার রোধে যাচাইকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। প্রক্রিয়াটি ১৯৫৯ সালের অস্ত্র আইন (Arms Act) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে এবং এতে ব্যাকগ্রাউন্ড চেক, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্থানীয় প্রশাসনের সুপারিশ সহ একটি বহু-স্তরীয় যাচাইকরণ প্রক্রিয়া জড়িত থাকবে।