ব্যুরো নিউজ , ৮ ফেব্রুয়ারি:দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল হেরে গেছেন। তাঁর এই পরাজয়ের পর, সমাজকর্মী অণ্ণা হজারের গলায় শোনা গেল এক ধরনের আক্ষেপ। অণ্ণা হজারের মতে, কেজরীওয়াল যখন থেকেই রাজনীতিতে যোগ দেন, তখন থেকেই তিনি তাকে নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। তবে, সেই পরামর্শগুলো কেজরীওয়াল তেমন গুরুত্ব দেননি। অণ্ণা আরও বলেন, কেজরীওয়াল ধন-দৌলতের প্রতি এক ধরনের মোহে আচ্ছন্ন ছিলেন, যা তাঁর রাজনৈতিক জীবনের ক্ষতি করেছে।
অণ্ণা হজারের বক্তব্য কি?
অণ্ণা হজারের বক্তব্য ছিল, “আমি আগেই বলেছিলাম, নির্বাচনে সাফল্য পেতে প্রার্থীর জীবনে শুদ্ধতা থাকা উচিত। তাঁকে জীবনযাত্রায় ত্যাগের মনোভাব থাকতে হবে। যদি কেউ এই গুণগুলি মেনে চলে, তবে ভোটাররা তাকে বিশ্বাস করবে। আমি বারবার কেজরীওয়ালকে এসব কথা বলেছি, কিন্তু তাঁর মাথায় এ সব কিছু ঢুকল না। তিনি বরং মদের দোকান এবং ধনসম্পত্তির প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।” অণ্ণা আরও মন্তব্য করেন, “কেন মদের দোকানের প্রসঙ্গ উঠে আসল? কারণ, কেজরীওয়াল নিজের দ্যুতি এবং সম্পত্তির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।”
কেজরীওয়ালের সঙ্গে অণ্ণা হজারের সম্পর্ক একসময় ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। ২০১১ সালে কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে অণ্ণার আন্দোলন শুরু হলে কেজরীওয়াল সেই মঞ্চে ছিলেন। সে সময়ে কেজরীওয়ালকে অনেকে অণ্ণার ‘ভাবশিষ্য’ বলে উল্লেখ করতেন। তবে এখন, সেই সম্পর্কের মধ্যে চিড় ধরেছে, যা সকলের জানা। ২০১২ সালে কেজরীওয়াল আপ গঠন করেন, যদিও রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে অণ্ণা হজারের মত ছিল একেবারেই বিরোধী। তিনি মনে করতেন, রাজনীতিতে গাঁথা ব্যক্তিত্বের শুদ্ধতা থাকতে হবে।
২০২৫ সালের দিল্লি নির্বাচনে কী হবে? বিজেপি-র জয় এবং কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া
দিল্লির ভোট গণনা এখনও চলছে এবং আপ সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসনের দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। কেজরীওয়াল এবং মণীশ সিসোদিয়া প্রমুখ প্রথম সারির নেতারা হেরে গেছেন। কেজরীওয়ালের নেতৃত্বে দিল্লিতে এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আপের ভাগ্যে কতটা আসন আসবে, তা নিয়ে এখন চূড়ান্ত দৃষ্টিপাত চলছে।অণ্ণা হজারের মতে, কেজরীওয়ালের উচিত ছিল তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে পরিষ্কার ও শুদ্ধভাবে পরিচালনা করা, যা তিনি আগেই বারবার তাঁকে জানিয়েছিলেন। এখন তিনি হতাশভাবে জানিয়েছেন, কেজরীওয়ালের প্রতি তার বিশ্বাস আর নেই।