ব্যুরো নিউজ ১০ জুন : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থান বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে এবং পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের মুখোশ উন্মোচন করতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ কর্মসূচির অধীনে গঠিত সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলগুলির সদস্যদের সঙ্গে আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানা গেছে, তার সরকারি বাসভবন লোক কল্যাণ মার্গে সন্ধ্যা ৭টায় এই বিশেষ নৈশভোজ ও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এই প্রতিনিধি দলগুলির অন্যতম সদস্য ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জেডিইউ সাংসদ সঞ্জয় ঝা-এর নেতৃত্বে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া সহ বিশ্বের মোট পাঁচটি দেশে সফর করেছেন। গত সপ্তাহেই এই কর্মসূচি শেষ করে তিনি কলকাতায় ফিরেছেন। এবার শোনা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানে আয়োজিত এই বিশেষ নৈশভোজে তিনিও যোগ দিতে পারেন।
PM Modi-Trump বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ ও সাইবার নিরাপত্তায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল
জম্মু ও কাশ্মীর-এর পহেলগাঁও-এ গত ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর পর ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালু করা হয়েছিল। এই অভিযানের মাধ্যমে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী পরিকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল, যার ফলস্বরূপ জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো গোষ্ঠীগুলির ১০০-এর বেশি সন্ত্রাসবাদী নিহত হয়েছিল।
এরপরই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান বিশ্বকে জানাতে এবং পাকিস্তানের ‘মুখোশ’ খুলে দিতে বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলগুলি গঠন করা হয়। এই দলগুলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্য (যেমন, এনসিপি-এসসিপি’র সুপ্রিয়া সুলে, কংগ্রেসের শশী থারুর, এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি), প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক সহ ৫০ জনের বেশি সদস্য ছিলেন, যারা ৩০টিরও বেশি দেশ সফর করেছেন।কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু-র দফতর থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের এই বৈঠকের কথা জানানো হয়েছে।
ট্যাংরা কান্ডঃ ময়না তদন্ত রিপোর্টে শ্বাসরোধের প্রমাণ, হত্যার তদন্তে নতুন মোড়
এই প্রতিনিধি দলগুলি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি কীভাবে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে মদত দিচ্ছে এবং ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, তা তুলে ধরেছে। তারা পাকিস্তানকে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (FATF)-এর ধূসর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানিয়েছিল।
গত বুধবার দিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকে যোগ দেননি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা বিমানবন্দরে তিনি তখন জানিয়েছিলেন যে, আসন্ন কালীগঞ্জ উপনির্বাচন নিয়ে তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির কারণে তিনি দিল্লি যেতে পারবেন না।
অল্প বিনিয়োগে ঘরে বসেই শুরু করুন ব্যবসা, রোজগার লক্ষ লক্ষ টাকা, বিশদে জানুন
তবে, সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে বিদেশে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় স্বার্থে তার দৃঢ় অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, তার রাজনৈতিক স্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থ বড়। শাসক দলের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকলেও দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠলে দেশের স্বার্থে যা যা করার দরকার, সবকিছু তিনি করবেন। বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণও করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই নৈশভোজে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্ভাব্য যোগদান রাজনৈতিক মহলে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।