ব্যুরো নিউজ ৩১ মে : আধার কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হওয়া এখন অতীত। নাগরিকদের সুবিধার্থে ভারত সরকার এবার আধার ঠিকানা পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে আরও সরল ও আধুনিকীকরণ করেছে। এখন থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট না করে, ঘরে বসেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সম্পন্ন করা যাবে। এর ফলে একদিকে যেমন গ্রাহকদের মূল্যবান সময় বাঁচবে, তেমনই প্রক্রিয়ায় আসবে স্বচ্ছতা ও গতি।
কীভাবে সম্পন্ন হবে এই প্রক্রিয়া?
প্রথমেই গ্রাহকদের নিজেদের স্মার্টফোনে এম-আধার (mAadhaar) অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। এই অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর উভয় স্থানেই উপলব্ধ। অ্যাপ ডাউনলোড করার পর, ঠিকানা প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় নথি যেমন— বিদ্যুৎ বিল, রেশন কার্ড অথবা পাসপোর্টের JPG ফাইল হাতের কাছে রাখতে হবে।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া:
- লগইন: এম-আধার অ্যাপে প্রবেশ করার জন্য আধার লিঙ্কযুক্ত মোবাইল নম্বরে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (OTP) আসবে। সেই OTP ব্যবহার করে লগইন করতে হবে।
- মাই আধার ট্যাব: লগইন করার পর ১২ ডিজিটের আধার নম্বর দিয়ে ‘মাই আধার’ ট্যাব খুলতে হবে। এখানে দ্বিতীয়বার OTP দিয়ে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
- ঠিকানা পরিবর্তনের বিকল্প: ‘মাই আধার’ ট্যাবে প্রবেশ করার পর ‘আপডেট অ্যাড্রেস অনলাইন’ অথবা ‘অ্যাড্রেস আপডেট রিকোয়েস্ট ভায়া ডকুমেন্ট’ অপশনটি দেখতে পাওয়া যাবে।
- নতুন ঠিকানা পূরণ: এই ধাপে গ্রাহককে নিজের নতুন ঠিকানা লিখতে হবে। ঠিকানা লেখার সময় ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষার সুবিধা পাওয়া যাবে, তবে ইংরেজি ভাষায় ঠিকানা লেখা বাধ্যতামূলক।
- নথি আপলোড: ঠিকানা লেখার পর, পূর্বে প্রস্তুত করা ঠিকানা প্রমাণের নথিটি (PDF বা JPG ফরম্যাটে) আপলোড করতে হবে।
- আবেদন জমা: সব শেষে ‘সাবমিট’ অপশনে ক্লিক করলেই আবেদনপত্র জমা হয়ে যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা ও যাচাইকরণ:
আবেদন জমা দেওয়ার পর একটি আপডেট রিকোয়েস্ট নম্বর (URN) স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। গ্রাহককে এই নম্বরটি যত্ন সহকারে লিখে রাখতে হবে, কারণ এটি ভবিষ্যতে আবেদনের স্থিতি যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজন হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আধার কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন হয়ে যাবে। ঠিকানা পরিবর্তনের স্থিতি জানতে দু’সপ্তাহ পর গ্রাহক আবার এম-আধার অ্যাপে লগইন করে URN ব্যবহার করে যাচাই করে নিতে পারবেন।
বিশেষ সতর্কতা:
- ঠিকানা লেখার সময় কোনো বানান ভুল করা যাবে না।
- আপলোড করা নথিটির পিডিএফ বা জেপিজি ফাইল পরিষ্কার এবং পাঠযোগ্য হতে হবে। অস্পষ্ট নথির ক্ষেত্রে আবেদন বাতিল হতে পারে।
প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কেন্দ্রের ঐতিহাসিক ঘোষণা: ১৫ জুন থেকে সারাদেশে বিনামূল্যে ভ্রমণের সুবিধা
ঠিকানা প্রমাণপত্র ছাড়া ঠিকানা পরিবর্তন:
যাদের কাছে ঠিকানা প্রমাণের কোনো নথি নেই, তারাও এই সুবিধা নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ‘অ্যাড্রেস ভেরিফিকেশন লেটার’ জমা দিতে হবে এবং একজন ‘অ্যাড্রেস ভেরিফায়ার’-এর প্রয়োজন হবে। অ্যাড্রেস ভেরিফায়ার তার বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এই পদ্ধতিতেও আধার নম্বরের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্ক থাকা আবশ্যক।
এই নতুন পদ্ধতির ফলে আধার কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন প্রক্রিয়াটি এখন অনেক বেশি সহজ, দ্রুত এবং গ্রাহক-বান্ধব হয়ে উঠেছে। এটি ডিজিটাল ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।