ব্যুরো নিউজ, ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৫ : বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বুধবার ঢাকায় পৌঁছালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার সকালে ৮০ বছর বয়সে দীর্ঘ রোগভোগের পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। ভারত সরকার ও দেশের মানুষের পক্ষ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এদিন সকালেই একটি বিশেষ বিমানে ঢাকা পৌঁছান জয়শঙ্কর।
তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মোদীর শোকবার্তা
ঢাকায় পৌঁছানোর পরপরই জয়শঙ্কর সাক্ষাৎ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের সঙ্গে। এই সাক্ষাতে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাঠানো একটি ব্যক্তিগত শোকবার্তা তারেক রহমানের হাতে তুলে দেন। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে জয়শঙ্কর জানান, “ভারত সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করেছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ ও মূল্যবোধ দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে পথ দেখাবে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর বার্তায় ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তের কথা স্মরণ করেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে তাঁর অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শেষ শ্রদ্ধা
আজ দুপুর ২টো নাগাদ ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম জিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী ছাড়াও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনাস, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের হাই কমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ জানান, বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর গণতন্ত্রের প্রসারে খালেদা জিয়ার ভূমিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন এবং ২০২৬-এর আসন্ন নির্বাচনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়
নামাজে জানাজা শেষে বিকেল ৩:৩০ মিনিটে শেরে বাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে স্বামী জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁকে সমাহিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দীর্ঘ ৩৬ দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বাংলাদেশে এদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে এবং রাজধানী জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
Bangladesh BNP : বিশাল জনসমর্থন নিয়ে রাজপথে তারেক রহমান: ১৭ বছর পর দেশে ফিরে প্রথম কর্মসূচি
কূটনৈতিক তাৎপর্য
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর জয়শঙ্করের এই সফরটি ভারতের কোনো মন্ত্রীর প্রথম বাংলাদেশ সফর। কূটনৈতিক মহলের মতে, বেগম জিয়ার প্রয়াণে ভারতের এই উচ্চপর্যায়ের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের আগামী দিনের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করছে।


















