ব্যুরো নিউজ, ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৫ : কেরালার পৌর রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সাক্ষী হলো দেশ। রাজ্যের রাজধানী তিরুবনন্তপুরম কর্পোরেশনের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো বিজেপি কাউন্সিলর মেয়র পদে নির্বাচিত হলেন। শুক্রবারের নির্বাচনে জয়লাভ করে গেরুয়া শিবিরের ভি ভি রাজেশ দক্ষিণ ভারতের এই গুরুত্বপূর্ণ শহরের মেয়রের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।
তিরুবনন্তপুরমে বাম দুর্গে গেরুয়া ধস
দীর্ঘ চার দশক ধরে তিরুবনন্তপুরম কর্পোরেশন ছিল বামপন্থী এলডিএফ (LDF)-এর দখলে। এবারের নির্বাচনে ৫০টি ওয়ার্ডে জয়লাভ করে বিজেপি সেই দুর্গে ধস নামিয়েছে। মেয়র নির্বাচনে রাজেশের পক্ষে ভোট পড়েছে ৫১টি (বিজেপির ৫০ জন কাউন্সিলর এবং একজন নির্দল)। বিপরীতে বামপ্রার্থী আর পি শিবাজি পেয়েছেন ২৯টি ভোট এবং কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ (UDF) প্রার্থী কে এস শবরীনাথন পেয়েছেন মাত্র ১৭টি ভোট। শপথ নেওয়ার পর নতুন মেয়র রাজেশ বলেন, “আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলব। ১০১টি ওয়ার্ডেই সমানভাবে উন্নয়ন পৌঁছে দিয়ে তিরুবনন্তপুরমকে দেশের অন্যতম উন্নত শহরে পরিণত করব।”
Kerala : ওয়ানাদের কংগ্রেসের দুর্গে পরপর আত্মহত্যা, সঙ্কটে দলের স্থানীয় নেতৃত্ব
প্রধানমন্ত্রী মোদীর অভিনন্দন
বিজেপির এই জয়কে কেরালার রাজনীতিতে একটি ‘যুগান্তকারী মুহূর্ত’ (Watershed Moment) হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সমাজমাধ্যমে এক বার্তায় তিনি দলের কর্মীদের বছরের পর বছর ধরে করা সংগ্রামের প্রশংসা করেন এবং জানান যে বিজেপি তিরুবনন্তপুরমের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাবে।
কোচি, কান্নুর ও কোল্লামে কংগ্রেসের দাপট
তিরুবনন্তপুরমে বিজেপি ইতিহাস গড়লেও রাজ্যের অন্যান্য বড় কর্পোরেশনগুলিতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে কংগ্রেস (UDF):
কোচি: মহিলা কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি ভি কে মিনিমোল ৪৮টি ভোট পেয়ে কোচি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
কান্নুর: ৩৬টি ভোট পেয়ে মেয়র হয়েছেন কংগ্রেসের টি ইন্দিরা।
কোল্লাম: কংগ্রেস মনোনীত এম কে হাফিজ ২৭টি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে বিজেপি কাউন্সিলররা ভোটদানে বিরত ছিলেন।
ত্রিশূর: গাইনোকোলজিস্ট ডঃ নিজি জাস্টিন ত্রিশূর কর্পোরেশনের মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন।
Kerala : খুনের আসামিদের ‘নায়কের’ মর্যাদা দিচ্ছে CPI(M), বাম শাসিত রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন বিজেপির
তৃপুনিথুরায় বিজেপির চমক
এরনাকুলাম জেলার তৃপুনিথুরা মিউনিসিপ্যালিটিতেও বিজেপি প্রথমবারের মতো ক্ষমতা দখল করেছে। সেখানে অ্যাডভোকেট পি এল বাবু মিউনিসিপ্যালিটি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটাভুটিতে কংগ্রেস অংশগ্রহণ না করায় ১৮টি ভোটের বিপরীতে ২১টি ভোট পেয়ে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী।
কেরালার এই স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, রাজধানী শহর ও নির্দিষ্ট কিছু পৌরসভায় বিজেপি শক্তিশালী উত্থান ঘটালেও রাজ্যের বাকি অংশে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট নিজেদের শক্তি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে বামফ্রন্ট বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে।



















