ব্যুরো নিউজ, ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৫ : একদিকে যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাই-ভোল্টেজ বঙ্গ সফরের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ঠিক তখনই রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে ঘনীভূত হচ্ছে অস্বস্তির মেঘ। আগামী ২৯ ডিসেম্বর অমিত শাহ কলকাতায় আসছেন। ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর তাঁর ঠাসা সাংগঠনিক কর্মসূচি রয়েছে। তবে এই সফরের সবথেকে বড় চমক হতে চলেছে বিজেপির নতুন ‘রাজ্য কমিটি’ ঘোষণা।
শাহের সফর ও যুব মোর্চার বিশেষ পরিকল্পনা
২৯ তারিখ রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে নামবেন অমিত শাহ। বিমানবন্দর থেকে নিউটাউন পর্যন্ত তাঁকে পৌঁছে দেবে বিজেপির যুব মোর্চার এক বিশাল বাইক মিছিল। এই মিছিলে কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি থেকে প্রায় ১,৫০০টি বাইক সামিল করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় সাংগঠনিক বৈঠকের মাধ্যমে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করবেন তিনি।
নতুন রাজ্য কমিটি ও দিলীপ ঘোষের ভবিষ্যৎ
রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য ইতিমধ্যেই প্রস্তাবিত নামের তালিকা দিল্লিতে পাঠিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, এই নতুন কমিটিতে কি জায়গা পাবেন দলের সবথেকে সফল প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ? সম্প্রতি বিজেপির ‘আদি’ নেতাদের পুনর্মিলন উৎসবে দিলীপ ঘোষের ডাক না পাওয়া জল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, যদি নতুন কমিটিতে দিলীপ ঘোষ বা তাঁর অনুগামীরা ব্রাত্য থাকেন, তবে বড় ধরনের বিদ্রোহের মুখে পড়তে পারে রাজ্য বিজেপি।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মোদী সরকারের ওপর রুষ্ট দিলীপ
রাজ্য রাজনীতিতে যখন তাঁর পদ নিয়ে টানাটানি, ঠিক তখনই বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লিকে কড়া বার্তা দিলেন দিলীপ ঘোষ। বুধবার বাদুড়িয়ায় মৎস্য শিকারে গিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের যা পরিস্থিতি, তাতে কেন্দ্রীয় সরকার শুধু কড়া বার্তা দিলে হবে না, আরও চাপ দিতে হবে। ওখানে মানুষের ওপর চরম অত্যাচার হচ্ছে, আমরা চুপ করে থাকতে পারি না।”
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরব হয়ে তিনি অবিলম্বে বিচারের দাবি জানান। অনুপ্রবেশ ইস্যুতে তাঁর সাফ কথা, “সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল সবার আমলেই অনুপ্রবেশ হয়েছে। এবার এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা হবে এবং পরে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।”
২০২৬-এর লক্ষ্য ও সিএএ (CAA) কার্ড
দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট জানিয়েছেন, ২০২৬-এর নির্বাচনে দল যেভাবে তাঁকে ব্যবহার করবে, সেভাবেই তিনি লড়বেন। এদিকে বিজেপি নেতৃত্ব সিএএ কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করছে। অমিত শাহের এই সফরে নির্বাচনী রণকৌশলের পাশাপাশি দলের পুরনো ও নতুন শিবিরের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাই হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।



















