ব্যুরো নিউজ, ২৬শে ডিসেম্বর ২০২৫ : দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফেরার পর আজ শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজপথের কর্মসূচিতে ফিরছেন বিএনপি-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বাদ জুমা তিনি শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এটি হবে দেশে ফেরার পর তার প্রথম বড় ধরনের কোনো প্রকাশ্য কর্মসূচি।
প্রথম কর্মসূচি: মাজারে শ্রদ্ধা ও সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ সফর
বিএনপি-র মিডিয়া উইং জানিয়েছে, তারেক রহমান শুক্রবার বিকেলে প্রথমে তার বাবার মাজারে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করবেন। এরপর তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বাবার মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে তারেক রহমান জাতীয় ঐক্য এবং রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার এক শক্তিশালী বার্তা দিতে চাইছেন।
Bangladesh : সাম্প্রদায়িক কট্টরপন্থার কবলে বাংলাদেশ: দীপু দাসের পর এবার অমৃত মণ্ডলকে পিটিয়ে হত্যা
পুবরাচলের বিশাল জনসভা ও ঐক্যের ডাক
বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ফেরার পর ঢাকার পুবরাচলে এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন তারেক রহমান। লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, “এই দেশ মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সবার। আমাদের লক্ষ্য একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া।” তিনি দেশের সাম্প্রতিক আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান। বিশেষ করে ৫ আগস্ট ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সাধারণ মানুষের ঐক্যের কথা তিনি পুনরুল্লেখ করেন।
নিরাপত্তা উদ্বেগ ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন এমন এক সময়ে ঘটল যখন বাংলাদেশ এক অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ১২ ডিসেম্বর যুবনেতা শরিফ ওসমান বিন হাদি-র ওপর বর্বরোচিত হামলা এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু দেশকে উত্তাল করে তুলেছে। এছাড়া রাজবাড়ীতে অমৃত মণ্ডল এবং ময়মনসিংহে দীপু দাসের মতো মব ভায়োলেন্সের ঘটনাগুলো জননিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং তিনি একটি বুলেটপ্রুফ গাড়িবহরের মাধ্যমে যাতায়াত করছেন।
আসন্ন নির্বাচন ও রাজনৈতিক সমীকরণ
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারেক রহমানের ফিরে আসা বিএনপি-র জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অনুমতি দিলে তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন, অন্যথায় তারেক রহমানই হবেন দলের নেতৃত্বের কাণ্ডারি। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর দেশব্যাপী জনসমর্থনের সীমাবদ্ধতার সুযোগে বিএনপি বর্তমানে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।


















