ব্যুরো নিউজ, ০৮ই ডিসেম্বর ২০২৫ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি সত্ত্বেও মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ নতুন করে সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। সোমবার (ডিসেম্বর ৮, ২০২৫) উবোন রাতচথানি প্রদেশে সীমান্তে নতুন সংঘর্ষে একজন থাই সেনা নিহত হয়েছেন এবং আরও চারজন আহত হয়েছেন।
থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, সোমবার সকালে কম্বোডিয়ার সৈন্যরা থাই বাহিনীর ওপর “সহায়ক ফায়ার অস্ত্র” ব্যবহার করে হামলা চালায়। এর ফলে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় শুরু হয়, যার জেরে এক থাই সৈনিক মারা যান। এই ঘটনার জবাবে থাই সেনা কম্বোডিয়ার সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা (এয়ার স্ট্রাইক) চালায় বলেও জানা গিয়েছে।
কম্বোডিয়ার পাল্টা দাবি: যদিও নম পেনের কর্মকর্তারা এই দাবি সরাসরি অস্বীকার করেছেন। কম্বোডিয়া জানিয়েছে, প্রিয়ে ভিয়ে এবং ওদ্দার মেয়ানচে সীমান্ত জেলাগুলোতে প্রায় একই সময়ে থাই বাহিনীই প্রথম হামলা শুরু করে। তারা জোর দিয়ে বলেছে যে, কম্বোডীয় ইউনিটগুলো কোনো পাল্টা হামলা চালায়নি।
Thailand : শিব মন্দিরের অবস্থান ঘিরে শুরু হল সংঘর্ষ , ব্যবহার হল BM21 রকেট এবং F16 যুদ্ধ বিমান !
সীমান্তে মন্দির এবং রাজনৈতিক বিতর্ক
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বরাবর ঘন জঙ্গলে দীর্ঘকাল ধরে এই বিরোধ চলে আসছে। প্রতিদ্বন্দ্বী টহল দলগুলোর মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষ ও অবিশ্বাস লেগেই থাকে। বিশেষত প্রিয়ে ভিয়ে মন্দিরের চারপাশের এলাকা নিয়ে ১৯৫০-এর দশকে কম্বোডিয়া ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই এই বিবাদ চলে আসছে।
ভূমি মাইনের অভিযোগ: সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কয়েক দিন আগেই থাইল্যান্ড জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, যেন কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে থাই ভূমিতে ভূমি মাইনের ব্যাপক ব্যবহার নিয়ে তদন্ত করা হয়। ব্যাংকক দাবি করে, এই ভূমি মাইনের কারণে একাধিক থাই সেনা এবং অন্তত একজন চীনা নাগরিক আহত হয়েছেন। কম্বোডিয়া অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নতুন সংঘর্ষের ফলে জাতিসংঘের কাছে করা থাইল্যান্ডের অভিযোগ কিছুটা চাপা পড়তে পারে।
5 lakhs Gitapath, Kolkata : ব্রিগেডে ঐতিহাসিক মহাজাগরণ ! ৬.৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ, গেরুয়া সমুদ্রে ঢাকল ময়দান।
মার্কিন মধ্যস্থতা সত্ত্বেও সঙ্ঘাত অব্যাহত: যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে দুই দেশ?
জুলাই মাসে টানা পাঁচ দিনের যুদ্ধে ৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। কিন্তু সেই শান্তি স্থায়ী হলো না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে, তাঁর হস্তক্ষেপেই চলতি বছরের অক্টোবর মাসে দুই পক্ষ শান্তি চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল। কিন্তু মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে ফের সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ায় সীমান্তে এখন পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। দুই পক্ষই একে অপরের ওপর দোষারোপ করায় এবং হতাহতের সংখ্যা বাড়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই সদস্য দেশের মধ্যে বাড়তে থাকা এই সঙ্ঘাত আসিয়ান (ASEAN)-এর জন্য নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে।

















