delhi car blast driver muslim doctor

ব্যুরো নিউজ ১১ নভেম্বর ২০২৫ : সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে চলন্ত গাড়িতে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তে গতি এসেছে। এপর্যন্ত এই ঘটনায় কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২৪ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং চলমান তদন্তের গতিপ্রকৃতি পর্যালোচনা করেন। তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং লোক নায়ক জয় প্রকাশ (LNJP) হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন। বিস্ফোরণের পরদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি উচ্চ-পর্যায়ের নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকও করেন, যেখানে এনআইএ (NIA) এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (IB) ডিরেক্টর সহ অন্যান্য শীর্ষ আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

দিল্লি পুলিশ এই ঘটনায় ইউএপিএ (UAPA)এক্সপ্লোসিভ অ্যাক্ট (Explosives Act)-এর ধারায় এফআইআর (FIR) দায়ের করে সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

 

বিস্ফোরক ও ফরিদা’বাদ মডিউলের সংযোগ

তদন্তকারী সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, প্রাথমিক ফরেনসিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের জন্য অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ফুয়েল অয়েল (Fuel Oil) এবং ডেটোনেটর (Detonator) ব্যবহার করা হয়েছিল। এই মিশ্রণটি সাধারণত ANFO নামে পরিচিত এবং এটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরক হিসাবে গণ্য হয়।

তদন্তকারীরা এই হামলার সঙ্গে ফরিদা’বাদে সম্প্রতি উন্মোচিত সন্ত্রাসবাদী মডিউলটির যোগসূত্র থাকার জোরালো সন্দেহ করছেন। ওই মডিউলটি থেকে ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সহ প্রায় ২,৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছিল। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই বিস্ফোরণের পিছনে ‘ফিদায়ে’ন-স্টাইল’ হামলা বা আত্মঘাতী হামলার সম্ভাবনা প্রবল।

তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটলেও ঘটনাস্থলে কোনো গর্ত (crater) তৈরি হয়নি বা আহতদের শরীরে বিস্ফোরকের খোল (pellet) পাওয়া যায়নি, যা একটি স্বাভাবিক বোমা বিস্ফোরণের ক্ষেত্রে বিরল।

Delhi Car Blast : দিল্লির লালকেল্লায় চলন্ত গাড়িতে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ, নিহতের সংখ্যা বাড়ছে; সন্ত্রাসের ছায়া!

গাড়ি ও সন্দেহভাজন চালক

বিস্ফোরণে ব্যবহৃত সাদা হুন্দাই আই২০ (Hyundai i20) গাড়িটির আংশিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছিল HR 26 7674/7624, যা নিশ্চিত করেছে যে গাড়িটি হরিয়ানার ফরিদা’বাদ-এ নিবন্ধিত। পুলিশ এই গাড়ির মালিক নদীম খান-এর সন্ধানে ফরিদা’বাদে বিশেষ দল পাঠিয়েছে।

এদিকে, সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের সময় গাড়ির চালকের আসনে ছিলেন ডঃ উমর মোহাম্মদ, যিনি ফরিদা’বাদ সন্ত্রাসবাদী মডিউলের এক পলাতক সদস্য। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা। মনে করা হচ্ছে, ডঃ উমর মোহাম্মদ নিষিদ্ধ সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ (Jaish-e-Mohammad)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং এনক্রিপ্টেড টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে পরিচালিত ডাক্তারদের এক উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর সদস্য।

গাড়ির মালিকানার শৃঙ্খলটিও জটিল। প্রাথমিক মালিক সলমান-কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি গাড়িটি দেবিন্দর নামে এক ব্যক্তিকে বিক্রি করেছিলেন, যিনি পরে তা অম্বালার এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন।

Kolkata : ডেঙ্গুতে ৪ বছরের শিশুর মৃত্যু: কলকাতার উত্তর-দক্ষিণে বাড়ছে উদ্বেগ, পুরসভার দিকে আঙুল তুলল বিরোধীরা

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া

বিস্ফোরণের ফলে গাড়ির চালক ডঃ উমর মোহাম্মদ-এর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তার পরিচয় নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার তার মা এবং দুই ভাইকে পুলওয়ামা থেকে এনে ডিএনএ (DNA) নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই নমুনাগুলি বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া দেহের অংশের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।

এছাড়া, দিল্লি পুলিশ এনসিআর (NCR) জুড়ে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালাচ্ছে। পাহাড়গঞ্জ এবং দরিয়াগঞ্জ সহ সংলগ্ন এলাকার হোটেলগুলিতে রাতভর তল্লাশি চালানো হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ডঃ উমর মোহাম্মদ-এর লালকেল্লায় প্রবেশ ও বহির্গমনের সম্পূর্ণ গতিবিধি ট্র্যাক করার চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর