ব্যুরো নিউজ ৩ নভেম্বর ২০২৫ : মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে ভারত যখন প্রথমবারের মতো মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতল, তখন ভারতীয় শিবিরে আনন্দের বন্যা। ফাইনাল ম্যাচে হরমনপ্রীত কৌরের হাতে নাদিন দে ক্লার্কের ক্যাচটি পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তৈরি হয় এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
এই উদযাপনে দলের সঙ্গে যোগ দেন ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়া ক্রিকেটার প্রতিক্ষা রাওয়াল। জয়ের উল্লাসে তিনি এতই খুশি ছিলেন যে, নিজের আঘাতের কথা ভুলে হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন এবং দলের বাকি সদস্যদের সঙ্গে নেচে ওঠেন!
ICC Women World Cup : বিশ্বকাপ হাতে মিতালী-ঝুলন, আবেগপ্রবণ হরমনপ্রীত: অবশেষে অধরা স্বপ্নপূরণ!
পরে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে এক আবেগঘন সাক্ষাৎকারে প্রতিক্ষা জানান, দলের এই জয়ে তিনি ভাষা হারিয়েছেন। বাংলাদেশ ম্যাচের সময় চোট পেয়ে বাইরে চলে যাওয়াটা তাঁর জন্য কতটা কঠিন ছিল, তা-ও তিনি বলেন।
“আমি এটা প্রকাশও করতে পারছি না। কোনো শব্দ নেই। আমার কাঁধের এই পতাকাটা আমার কাছে অনেক কিছু। দলের সঙ্গে এখানে থাকতে পারাটা যেন এক পরাবাস্তব অনুভূতি। চোট খেলার অংশ। আমি শুধু খুশি যে আমি এখনও এই দলটার অংশ থাকতে পারলাম। আমি এই দলটাকে ভালোবাসি। আমরা সত্যিই করে দেখালাম! এতদিন পর আমরাই প্রথম ভারতীয় দল যারা বিশ্বকাপ জিতলাম। গোটা ভারতের এই জয় প্রাপ্য। সত্যি বলতে, খেলা দেখাটা খেলার চেয়েও কঠিন ছিল। প্রতিটি উইকেট, প্রতিটি বাউন্ডারি – আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। এই শক্তি, দর্শক আর আবেগ – সব মিলিয়ে অবিশ্বাস্য!”
কোহলি-শচীনদের বিশেষ বার্তা
দেশের মেয়েরা ইতিহাস গড়ার পর ভারতের প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রিকেটাররা সোশ্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
- বিরাট কোহলি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে লেখেন, “মেয়েরা ইতিহাস তৈরি করেছে এবং একজন ভারতীয় হিসেবে আমি এর চেয়ে বেশি গর্বিত হতে পারতাম না। এত বছরের কঠোর পরিশ্রম অবশেষে সফল হলো। এই ঐতিহাসিক অর্জনের জন্য হরমন এবং পুরো দল বড় একটা প্রশংসার যোগ্য। এই জয় আমাদের দেশের মেয়েদের খেলাধুলায় আসতে অনুপ্রাণিত করবে। জয় হিন্দ।”
- কিংবদন্তী শচীন টেন্ডুলকার X-এ লেখেন, “১৯৮৩ (পুরুষদের বিশ্বকাপ জয়) একটি প্রজন্মকে বড় স্বপ্ন দেখতে এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য দৌঁড়াতে অনুপ্রাণিত করেছিল। আজ আমাদের মহিলা ক্রিকেট দল সত্যিকারের বিশেষ কিছু করল। তারা দেশের অসংখ্য অল্পবয়সী মেয়েকে ব্যাট-বল ধরতে, মাঠে নামতে এবং বিশ্বাস করতে অনুপ্রাণিত করেছে যে তারাও একদিন ওই ট্রফি তুলতে পারবে। এটি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের যাত্রায় এক সংজ্ঞায়িত মুহূর্ত। খুব ভালো করেছ টিম ইন্ডিয়া, তোমরা গোটা দেশকে গর্বিত করেছ।”
- যুবরাজ সিং ভারতীয় মহিলা দলের অটুট মনোভাবের প্রশংসা করেন এবং উত্থান-পতনের মাঝেও একসঙ্গে থাকার জন্য তাদের সাধুবাদ জানান।
- মহম্মদ কাইফ এটিকে “এক স্বপ্নময় রাত” বলে বর্ণনা করেন, যখন হরমনপ্রীতের দল একটি পরিচিতি পেল এবং কোটি কোটি ভক্ত পেলেন। তিনি লেখেন, “এক সালাম ইশ দেশ কি বেটিঁয়ো কে নাম।”
- প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার বলেন, শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে পথে হারানোর কারণে এই জয় আরও বেশি বিশেষ।



















