ব্যুরো নিউজ ০৮ অক্টোবর ২০২৫ : উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলার মিরিকে অবিরাম বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ ভূমিধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক ঘরবাড়ি, ভেঙে পড়েছে বহু গুরুত্বপূর্ণ সেতু ও রাস্তা। প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল দুর্গত পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ত্রাণ শিবিরে রেখেছে। বৃষ্টি থামলেও ৯০০-র বেশি পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে হাহাকার বাড়ছে।
আশ্রয়হীন দুর্গতদের আকুতি: ‘সমস্ত ভেসে গেছে, দ্রুত চাই আবাসন’
ত্রাণ শিবিরে থাকা দুর্গত মিরিকবাসীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে এক চরম দুর্দশার চিত্র। তাঁরা জানাচ্ছেন, “আমাদের ফিরে যাওয়ার মতো আর কোনো আশ্রয় নেই। ভূমিধস এবং প্লাবনে আমাদের গৃহ-আবাস সমস্ত ভেসে গেছে। খাওয়া, পরা, থাকার ব্যবস্থা সমস্ত ধ্বংস। জানি না কতদিন এই ত্রাণ শিবিরে থাকতে হবে।” ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির তরফে দ্রুত আবাসন ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, “আমরা এইরকম প্রায় ৯০টি পরিবার আছি – সরকারের উচিত আমাদের দ্রুত আবাসন প্রদান করা।”
রাজ্য সরকারের ত্রাণ নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ বিরোধী দলনেতা
এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার চৈতন্যপুরের আঠারোখাই এলাকা পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি রাজ্য সরকারের ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিলের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড় করান।
বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, “কেন্দ্র ইতিমধ্যেই দুর্যোগ ত্রাণ তহবিল (Calamity Relief Fund) থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ৬,০০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ প্রদান করেছে।” তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিও পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার নির্দেশেই বিজেপি নেতা বিপ্লব দেব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলেও তিনি জানান।
আবাসন তৈরির দায়িত্ব নেওয়ার আশ্বাস শুভেন্দুর
পরিদর্শন চলাকালীন বন্যা দুর্গতদের অভিযোগের মুখে পড়তে হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, “আমরা এলাকাবাসী সাধারণ গরিব মানুষ, আমাদের এত ক্ষতি হওয়ার কথা নয়, কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে আজ আমরা বানভাসি।”
এর উত্তরে বিরোধী দলনেতা ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করে বলেন, “আমরা আওয়াজ তুলব, ভরসা রাখুন। আমরা আছি, ৮টি বাড়ি আপাতত তৈরি করতে হবে, আমরা দায়িত্ব নেব, শুধু জায়গাটা বিডিও-র কাছ থেকে আদায় করুন। আমাদের বিধায়কের তহবিল থেকে বাড়তি যে টাকা লাগবে তার ব্যবস্থা আমরা করব।”
রাজ্য সরকারের ত্রাণ বিতরণ নিয়ে তিনি আরও বলেন, “সরকার থেকে পচা আলু দিয়ে গেছে আর স্কুলের মিড-ডে মিলের চাল। আমরা দিয়ে গেলাম প্রকৃত ত্রাণ। আমাদের এখানে যে বিজেপির বিধায়ক আছেন, তারা ত্রাণ বন্টন করছেন, মণ্ডল সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান করছেন, আমরাও আজকে সেই প্রয়াসে যোগ করে গেলাম।” তিনি জানান, জমি বরাদ্দ এবং ঘর তৈরি করতে আরও প্রায় ১৫ দিন সময় লাগবে।




















