cji gavai under shoe attack protest by hindu lawyer

ব্যুরো নিউজ ০৬ অক্টোবর ২০২৫ : সোমবার সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলার সময় প্রধান বিচারপতি (CJI) ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাইকে লক্ষ্য করে জুতো ছুঁড়ে মারার চেষ্টা করা হয়। এই ‘চাঞ্চল্যকর’ ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবীর নাম রাকেশ কিশোর, যাকে সঙ্গে সঙ্গে আদালতের কর্মীরা আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

 

হামলার মুহূর্ত ও অভিযুক্তের স্লোগান

‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ (Bar and Bench) রিপোর্ট অনুসারে, ঘটনাটি ঘটে যখন প্রধান বিচারপতি অন্যান্য আইনজীবীদের মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন শুনছিলেন। জানা যায়, অভিযুক্ত আইনজীবী রাকেশ কিশোর এজলাসের দিকে এগিয়ে যান, নিজের জুতো খুলে তা প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে ছুঁড়তে যান।

তবে আদালত চত্বরে উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মীরা দ্রুত তাঁকে বাধা দেন এবং আটক করেন। আটক করার সময় ওই আইনজীবীকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, “সনাতন কা অপমান নেহি সহেঙ্গে (সনাতন ধর্মের অপমান সহ্য করা হবে না)।”

Supreme Court : সুপ্রিম কোর্টে বিষ্ণুমূর্তি প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য, প্রধান বিচারপতির পদক্ষেপে অসন্তুষ্ট সনাতনীরা

সিজেআই-এর প্রতিক্রিয়া ও চলমান জিজ্ঞাসাবাদ

হামলার চেষ্টার পরেও প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই সম্পূর্ণ শান্ত ছিলেন। তিনি উপস্থিত আইনজীবীদের মামলার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেন। ঘটনার পরে তিনি বলেন:

“এসবের দ্বারা মনোযোগ নষ্ট করবেন না। এই বিষয়গুলো আমাকে প্রভাবিত করে না।”

দিল্লির ডিসিপি এবং সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বর্তমানে অভিযুক্ত আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

 

বিতর্কের নেপথ্যে খাজুরাহো মন্তব্য

আইনজীবী রাকেশ কিশোরের এই পদক্ষেপের পিছনে প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যকে কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রোহিত পাণ্ডে এই ঘটনার নিন্দা করে বলেন, তাঁর ধারণা প্রধান বিচারপতির ধর্মীয় দেবতা সম্পর্কিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই আক্রমণ করা হয়েছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর খাজুরাহোর জাভারি মন্দিরে ভগবান বিষ্ণুর একটি সাত ফুটের মূর্তি পুনঃস্থাপন ও পুনর্নির্মাণের আর্জি জানিয়ে করা একটি জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলা খারিজ করার সময় প্রধান বিচারপতি গাভাই মন্তব্য করেন:

“এটি সম্পূর্ণভাবে প্রচারের উদ্দেশ্যে করা জনস্বার্থ মামলা… যান, গিয়ে দেবতাকে নিজেই কিছু করতে বলুন। যদি আপনারা বলেন যে আপনারা ভগবান বিষ্ণুর একনিষ্ঠ ভক্ত, তাহলে প্রার্থনা করুন এবং কিছু ধ্যান করুন।”

আদালত জানায়, বিষয়টি প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বিভাগের (ASI) এক্তিয়ারভুক্ত। প্রধান বিচারপতি আরও বলেছিলেন, “এই সময়ের মধ্যে আপনারা যদি শৈব-বিরোধী না হন, তবে আপনারা সেখানে গিয়ে পূজা করতে পারেন। সেখানে শিবের একটি বিরাট লিঙ্গ রয়েছে, যা খাজুরাহোর অন্যতম বৃহত্তম।”

তাঁর এই মন্তব্যগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় এবং ব্যাখ্যা চাওয়ার দাবি ওঠে। এই বিতর্কের পরেই প্রধান বিচারপতি পরে ব্যাখ্যা দিয়ে জানান যে তাঁর কথাগুলি “ভুলভাবে উপস্থাপিত” করা হয়েছে এবং তিনি সকল ধর্মকে সম্মান করেন বলে পুনর্ব্যক্ত করেন।

Supreme Court : বিচার ব্যবস্থায় হিন্দু ধর্ম ও বিশ্বাস নিয়ে বিতর্ক: একের পর এক ঘটনায় বাড়ছে ক্ষোভ


ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ও সিজেআই-এর অবস্থান

যদিও প্রধান বিচারপতি এমন আচরণে প্রভাবিত হননি বলে দাবি করেছেন এবং তাঁর নীরব থাকা এটাই প্রমাণ করে যে তিনি প্রতিবাদটি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। কিন্তু এই প্রতিবাদের পরেও তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইবেন কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপই  ‘সকল ধর্মকে সম্মান করার’  দাবিকে শুধু কথায় নয়, কাজে প্রতিফলিত করবে।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর