ব্যুরো নিউজ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : মানহানির অভিযোগে বিজেপি নেতা ও অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর দায়ের করা ১০০ কোটি টাকার মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে বড় ধাক্কা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি অরিণদম মুখার্জীর একক বেঞ্চ কুণাল ঘোষকে আগামী তিন মাসের জন্য মিঠুন চক্রবর্তী সম্পর্কে কোনো ধরনের “জনসাধারণের মন্তব্য” করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার প্রেক্ষাপট:
মিঠুন চক্রবর্তী, যিনি বিজেপির একজন শীর্ষ নেতা, কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলার মূল কারণ হলো কুণাল ঘোষের কিছু মন্তব্য, যেখানে তিনি মিঠুন চক্রবর্তীর পুত্রকে একটি ধর্ষণ মামলায় জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি কুণাল ঘোষ আরও অভিযোগ করেছিলেন যে মিঠুন চক্রবর্তী চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত ছিলেন এবং নিজেকে রক্ষা করার জন্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
মিঠুন চক্রবর্তী তার অভিযোগে জানিয়েছেন যে কুণাল ঘোষের এই ধরনের মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই মন্তব্যের ফলে তার সামাজিক মর্যাদা এবং সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এছাড়াও, তার নতুন সিনেমা ও বিজ্ঞাপনের কাজও ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে তিনি পেশাগতভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন। মামলায় তিনি জানিয়েছেন যে কুণাল ঘোষ তার স্ত্রী সম্পর্কেও কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন।
আদালতের নির্দেশ:
বুধবার এই মামলার শুনানি হয়। মিঠুন চক্রবর্তীর আইনজীবী আদালতে যুক্তি দেন যে কুণাল ঘোষের করা মন্তব্য শুধুমাত্র তার সম্মানই ক্ষুণ্ন করেনি, বরং একজন অভিনেতা হিসেবে তার পেশাগত জীবনেও প্রভাব ফেলেছে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে, আদালত কুণাল ঘোষকে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে এবং আগামী তিন মাসের জন্য মিঠুন চক্রবর্তী সম্পর্কে কোনো ধরনের জনসমক্ষে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ডিসেম্বরে ধার্য করা হয়েছে।
কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া:
এই আইনি পদক্ষেপের জবাবে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন যে তিনি মামলা লড়তে প্রস্তুত। তিনি বলেছেন, “যার মর্যাদা আছে, সে কি এতবার দল পরিবর্তন করে? আদালতে দেখা হবে। আমি নিজেও তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছি।” কুণাল ঘোষ কলকাতা’র ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে পাল্টা মানহানির মামলা করেছেন, যেখানে তিনি অভিযোগ করেছেন যে মিঠুন তার বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করেছেন। কুণাল ঘোষ আরও বলেন যে তিনি আদালতকে মিঠুনের সঙ্গে চারটি বা পাঁচটি চিট ফান্ডের সম্পর্কের বিষয়ে জানাবেন এবং পুরো বিষয়টি সিবিআই তদন্তের জন্য আবেদন করবেন।