Floating F35s INS frigates

ব্যুরো নিউজ ২৮শে আগস্ট ২০২৫ : মঙ্গলবার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতীয় নৌবাহিনীর ইস্টার্ন নেভাল কমান্ডে দুটি অত্যাধুনিক বহুমুখী স্টেলথ ফ্রিগেট— আইএনএস উদয়গিরি এবং আইএনএস হিমগিরি—কমিশন করেছেন। এই দুটি যুদ্ধজাহাজ ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘প্রজেক্ট ১৭এ’-র (Project 17A) অধীনে নির্মিত হয়েছে এবং এটিই প্রথমবার যখন দুটি ভিন্ন শিপইয়ার্ডে নির্মিত যুদ্ধজাহাজ একই সময়ে নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হলো। আইএনএস উদয়গিরি তৈরি হয়েছে মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (MDL)-এ এবং আইএনএস হিমগিরি নির্মিত হয়েছে কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (GRSE)-এ।

 

‘ভাসমান এফ-৩৫’ উপাধি দিলেন রাজনাথ সিং

যুদ্ধজাহাজ দুটিকে কমিশন করার সময় রাজনাথ সিং বলেন, “আপনারা দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এফ-৩৫ যুদ্ধজাহাজ চালু করেছেন। একটি দেশের আকাশে উড়ন্ত এফ-৩৫ আছে, আর আপনারা একটি ভাসমান এফ-৩৫ তৈরি করেছেন, যা আবার ভারতে তৈরি।” তিনি আমেরিকার এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে এই ফ্রিগেটগুলোর তুলনা করেন, যা তাদের স্টিলথ এবং গতির জন্য পরিচিত। রাজনাথ সিং আরও বলেন যে, এই যুদ্ধজাহাজগুলোতে থাকা উন্নত অস্ত্র ও সেন্সর প্যাকেজ সেগুলোকে “আমাদের সমুদ্রের অপরাজেয় রক্ষক” হিসেবে গড়ে তুলবে।

Indian Navy Nistar : ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দিচ্ছে গভীর সমুদ্রের প্রহরী ‘নিস্তার’ !

আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নের প্রতিফলন

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, আইএনএস উদয়গিরি এবং আইএনএস হিমগিরির কমিশন ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি দৃশ্যমান প্রমাণ। তিনি বলেন যে এই দুটি যুদ্ধজাহাজ দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হবে। প্রতিরক্ষা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতির এটি একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি আরও যোগ করেন, এই ফ্রিগেটগুলো শুধু নৌবাহিনীর যুদ্ধ সক্ষমতাই বাড়াবে না, বরং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘ফার্স্ট রেসপন্ডার’ এবং ‘পছন্দের নিরাপত্তা অংশীদার’ হিসেবে ভারতের ভূমিকাকেও শক্তিশালী করবে।

Defence : ভারতীয় নৌসেনার নব রণতরী আইএনএস তমালের উদ্বোধন হল রাশিয়ায় ! জানুন বিশেষত্ব

যুদ্ধজাহাজের বিশেষত্ব

আইএনএস উদয়গিরি এবং আইএনএস হিমগিরি উভয়ই প্রজেক্ট ১৭এ-এর অংশ, যা প্রজেক্ট ১৭ (শিবালিক ক্লাস)-এর উত্তরসূরি। এই জাহাজগুলির কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:

  • স্টেলথ প্রযুক্তি: রাডার, ইনফ্রারেড ও অন্যান্য সেন্সরের কাছে এদের উপস্থিতি সহজে ধরা পড়ে না।
  • উন্নত অস্ত্রশস্ত্র: এতে সুপারসনিক সারফেস-টু-সারফেস ক্ষেপণাস্ত্র, সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, এবং দ্রুতগতির কামান ব্যবস্থা রয়েছে।
  • যুদ্ধ সক্ষমতা: জাহাজ দুটি বিমান-বিধ্বংসী, জাহাজ-বিধ্বংসী এবং ডুবোজাহাজ-বিধ্বংসী যুদ্ধ পরিচালনা করতে সক্ষম।
  • দেশীয় সরঞ্জাম: এই যুদ্ধজাহাজগুলোতে প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের একটি বড় সাফল্য। 

সম্পূর্ণ স্বদেশী প্রজুক্তিতে তৈরি এই যুদ্ধজাহাজগুলি বিধ্বংসী ডেস্ট্রয়ারের মতন ভারী না হয়েও বিপুল আক্রমণাত্মক ক্ষমতা রাখে । এবং হাল্কা হওয়ার জন্যে তীব্র গতিতে জলপথে হামলা করতে পারে  । স্টেলথ প্রযুক্তি থাকার ফলে বিশাল সামুদ্রিক অঞ্চলে প্রায় অদৃশ্য থাকতে পারে যন্ত্র এবং খলা চোখে – তাই দৃশ্যমান হওয়ার আগেই আঘাত হেনে পাল্টা আঘাত এড়িয়ে যেতে পারে । এক কথায় আকাশপথে পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গি বিমানের সমতুল্য – জলপথে !   
রাজনাথ সিং আরও বলেন যে, ভারত কখনও আক্রমণাত্মক সম্প্রসারণবাদে বিশ্বাস করে না এবং প্রথমে কোনো দেশকে আক্রমণ করেনি। তবে দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে ভারত তার উপযুক্ত জবাব দিতে জানে। পাহেলগাওতে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত যে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিল, তিনি তার উদাহরণও দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর