ব্যুরো নিউজ ২৮শে আগস্ট ২০২৫ : বুধবার মহারাষ্ট্রের গাদচিরোলি-নারায়ণপুর সীমান্তে আট ঘণ্টা ধরে চলা এনকাউন্টারে চার নকশাল নিহত হয়েছে বলে মহারাষ্ট্র পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। গাদচিরোলির পুলিশ সুপার নীলোৎপল জানান, “গাদচিরোলি-নারায়ণপুর সীমান্তের কোপরশি বনাঞ্চলে প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে চলা গুলি বিনিময়ের পর ৪ জন মাওবাদীর (১ জন পুরুষ এবং ৩ জন মহিলা) দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৪টি অস্ত্র, যার মধ্যে ১টি এসএলআর রাইফেল, ২টি ইনসাস রাইফেল এবং ১টি .৩০৩ রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় আরও তল্লাশি অভিযান চলছে।”
নকশাল দমনে পুলিশের তৎপরতা, এনকাউন্টারের কারণ
পূর্ব মহারাষ্ট্রের গাদচিরোলি জেলার ছত্তিশগড় সীমান্তের কাছে কোপরশি গ্রামে নকশালদের উপস্থিতির খবর পেয়ে সি-৬০ কমান্ডো টিম তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের সময়ই বুধবার সকালে পুলিশ ও নকশালদের মধ্যে এনকাউন্টার শুরু হয়।
দান্তেওয়াড়ায় ২৯ জন নকশালের আত্মসমর্পণ, ‘লোন ভররাতু’ অভিযানের সাফল্য
গত ২০ আগস্ট ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া ও নারায়ণপুর জেলায় মোট ২৯ জন নকশাল নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে, যাদের মাথার উপর মোট ৫৫.৫০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ছিল। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এর মধ্যে ২১ জন মাওবাদী দান্তেওয়াড়ায় এবং আটজন নারায়ণপুরে আত্মসমর্পণ করেছে।
দান্তেওয়াড়া জেলার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, ২১ জন নকশাল “অমানবিক এবং ফাঁপা” মাওবাদী মতাদর্শে মোহভঙ্গ হওয়ার কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্যে ১৩ জনের মাথার উপর সম্মিলিতভাবে ২৫.৫০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ছিল।
পুনর্বাসন অভিযানে আকৃষ্ট নকশালরা
আত্মসমর্পণকারী ক্যাডাররা জানায়, তারা পুলিশের পুনর্বাসন অভিযান ‘লোন ভররাতু’ (গোন্ডি উপভাষায় যার অর্থ ‘নিজের বাড়ি/গ্রামে ফিরে এসো’) এবং রাজ্য সরকারের নতুন আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন নীতির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। এই ২১ জন নকশালের মধ্যে কেয়ে ওরফে কেশা লেকাম নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-এর কোম্পানি নং ১-এর সদস্য ছিল এবং তার মাথার উপর ৮ লক্ষ টাকার পুরস্কার ছিল।
দান্তেওয়াড়ায় ১,০৪২ জন নকশালের আত্মসমর্পণ
পুলিশ জানায়, এই নতুন আত্মসমর্পণের পর ২০২০ সালের জুন মাস থেকে ‘লোন ভররাতু’ অভিযানের অধীনে দান্তেওয়াড়া জেলায় এ পর্যন্ত ১,০৪২ জন নকশাল সশস্ত্র আন্দোলন ত্যাগ করেছে, যার মধ্যে ২৬৭ জনের মাথার উপর পুরস্কার ছিল। নারায়ণপুর জেলায় আত্মসমর্পণ করা আটজনের মধ্যে দুজন নারী ছিল এবং তাদের মাথার উপর সম্মিলিতভাবে ৩০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ছিল।
এ বছরের শুরুতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে নকশালবাদ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।