ব্যুরো নিউজ ২৮শে আগস্ট ২০২৫ : বৃহস্পতিবার এসএসসি-র নবম-দশম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসি মায়া সাহাকে সিজিও কমপ্লেক্সে তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, ধৃত তৃণমূল বিধায়কের পিসি কাউন্সিলার মায়া সাহা হাজিরা দিলে তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। প্রয়োজনে পিসি-ভাইপোকে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। ইডি আধিকারিকরা তার বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল ফোনটি তারই সামনে খুলে পরীক্ষা করবেন।
সম্পত্তি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিপত্র তলব
ইডি মায়া সাহাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি, যেমন ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট এবং সম্পত্তির কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছিল, যা তিনি জমা দিয়েছেন। এর আগে, গত সোমবারও ইডি জীবনকৃষ্ণ সাহার পিসির বাড়িতে হানা দিয়েছিল। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চাকরি-বিক্রির টাকা, ইডির দাবি
আদালতে পেশ করা নথিতে ইডি দাবি করেছে, বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দফায় দফায় চাকরি-বিক্রির টাকা জমা পড়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জীবনকৃষ্ণ এবং তার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা জমা হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা জানায়। ইডি’র বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া নথিতে কোন চাকরিপ্রার্থী কত টাকা দিয়েছিল এবং কোন তারিখে টাকা জমা পড়েছিল, তার বিস্তারিত তথ্য রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন
ইডি তদন্তে জীবনকৃষ্ণ সাহার মোট আটটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে, যেখান থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। ইডি’র দাবি, মোট ৪৬ লক্ষ টাকার লেনদেন ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ২৬ লক্ষ টাকা বিধায়কের স্ত্রী এবং ২০ লক্ষ টাকা তার বাবার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল। জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী পেশায় শিক্ষিকা। তার অ্যাকাউন্টে এত বিপুল অঙ্কের টাকা কীভাবে এল, তা নিয়ে ইডি আদালতে প্রশ্ন তুলেছে এবং তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এই সমস্ত লেনদেন ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে হয়েছিল বলে জানা গেছে।
স্ত্রী ও বাবার অজানা
জেরার মুখে জীবনকৃষ্ণের স্ত্রী তদন্তকারীদের জানান, তিনি এই বিপুল অঙ্কের লেনদেন সম্পর্কে কিছুই জানেন না। বেতন ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে এত টাকা আসার কথা নয়। একইভাবে, বাবার অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের লেনদেন নিয়েও ইডি জেরা করলে তিনিও এই বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। মোটামোটি রাজ্যে দুর্নীতিতে ধরা পড়ার পরে কেউই জানেনা তারা কিভাবে এই সমস্তর সাথে যুক্ত – যদিও সুবিধা ভোগ করার সময় দুর্নীতির বিষয়ে তাদের চিন্তা ভাবনা থাকেনা ।