ব্যুরো নিউজ ৪ আগস্ট ২০২৫ : ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক শিবু সোরেন ৮১ বছর বয়সে দিল্লিতে প্রয়াত হয়েছেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর দিল্লির শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালে সোমবার সকাল ৮টা ৫৬ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শারীরিক অসুস্থতা ও শেষ দিনগুলি
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিবু সোরেন দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। দেড় মাস আগে তাঁর স্ট্রোকও হয় এবং গত এক মাস ধরে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। গত ২৪ জুন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, সে সময় মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন তার বাবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা জানিয়েছিলেন।
হেমন্ত সোরেনের শোকবার্তা
শিবু সোরেনের ছেলে এবং ঝাড়খণ্ডের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এক্স (পূর্বের টুইটার) বার্তায় তার শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “শ্রদ্ধেয় দিশম গুরুজি আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে গেছেন… আজ আমি ‘শূন্য’ হয়ে গেছি।”
শিবু সোরেনের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন
শিবু সোরেন গত ৩৮ বছর ধরে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা পৃষ্ঠপোষক হিসাবে সম্মানিত। চার দশকের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি আটবার লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং দু’বার রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যার মধ্যে দ্বিতীয় মেয়াদটি চলমান ছিল।
সাঁওতাল সম্প্রদায়ের অন্যতম সদস্য শিবু সোরেন তৎকালীন বিহারের রামগড় জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এ কে রায় এবং কুর্মি মাহাতো নেতা বিনোদ বিহারী মাহাতোর সাথে মিলে তিনি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা গঠন করেন।
১৯৮০ সালে তিনি প্রথমবারের মতো দুমকা থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন, যা পরবর্তীতে জেএমএমের শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত হয়। তবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে তিনি তার এই গড় রক্ষা করতে পারেননি; বিজেপির নলিন সোরেন ৪৫,০০০ এরও বেশি ভোটের ব্যবধানে তাকে পরাজিত করেন।
প্রবীণ এই নেতার প্রয়াণে ঝাড়খণ্ড সহ সারা দেশে শোকের আবহ সৃষ্টি হয়েছে।