India 4th largest economy not dead economy Piyush Goyel vs Donald Trump

ব্যুরো নিউজ ২য় আগস্ট ২০২৫ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ভারতের পণ্য আমদানিতে ২৫% শুল্ক এবং রাশিয়ার তেল ও সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য অতিরিক্ত জরিমানার ঘোষণার পর ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল লোকসভায় দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন যে, ভারত এক দশকেরও কম সময়ে ‘ফ্র্যাজাইল ফাইভ’ ( ভঙ্গুর পাঁচ ) অর্থনীতির তালিকা থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং শীঘ্রই জিডিপি আকারের দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে।

ট্রাম্পের মন্তব্য ও শুল্ক আরোপ

বুধবার ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে ভারতের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা ১লা আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে। এর পাশাপাশি রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য ভারতকে একটি অনির্দিষ্ট জরিমানা দিতে হবে বলেও তিনি জানান। ট্রাম্প তার পোস্টে বলেছেন, “আমি ভারতের রাশিয়াকে নিয়ে কী করে তাতে কিছু যায় আসে না। তারা তাদের ‘মৃত অর্থনীতি’ নিয়ে একসঙ্গে ডুবে যেতে পারে, তাতে আমার কোনো পরোয়া নেই। আমরা ভারতের সাথে খুব কম ব্যবসা করেছি, তাদের শুল্ক খুব বেশি, বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ভারত তাদের সামরিক সরঞ্জামের বেশিরভাগই রাশিয়া থেকে কেনে এবং চীনের পাশাপাশি রাশিয়ার বৃহত্তম জ্বালানি ক্রেতা, যখন সবাই চায় রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যা বন্ধ করুক। ট্রাম্প ভারতের বিআরআইসিএস (BRICS) সদস্যপদ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে এটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী দেশগুলোর একটি জোট বলে আখ্যায়িত করেছেন।
হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন যে ভারত এখনও বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম, তবে আলোচনা চলছে। তিনি জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে ভারতের সাথে বাণিজ্য আলোচনা করছে এবং বিআরআইসিএস-এর সদস্যপদও এই আলোচনার একটি কারণ।

Trump Tariff : ২৫% শুল্কের ধাক্কা, পাকিস্তানকে তেল ভান্ডারের প্রস্তাব, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিমুখী নীতিতে ভারতের কড়া অবস্থান !

ভারতের জবাব: জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের জবাবে বৃহস্পতিবার লোকসভায় পীযূষ গোয়েল বলেন, ভারত ‘ফ্র্যাজাইল ফাইভ’ অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে এসে বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “সংস্কার, কৃষক, এমএসএমই (MSMEs) এবং শিল্পপতিদের কঠোর পরিশ্রমের ভিত্তিতে আমরা বিশ্বের একাদশ বৃহত্তম অর্থনীতি থেকে বিশ্বের শীর্ষ ৫টি অর্থনীতির মধ্যে চলে এসেছি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা শীঘ্রই জিডিপি আকারের দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হব।” গোয়েল স্পষ্ট করে বলেছেন যে, ভারত তার কৃষক, উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের (MSMEs) স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে এবং ওয়াশিংটনের সাথে বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যাবে।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক মাস ধরে একটি ন্যায্য, সুষম এবং পারস্পরিক উপকারী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য আলোচনায় নিযুক্ত রয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্যের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, সরকার কৃষকদের কল্যাণ, উদ্যোক্তা এবং এমএসএমই-গুলির সুরক্ষা ও প্রচারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নেবে।

 

Donald Trump : মার্কিন রাষ্ট্রপতির কটূক্তির পরেও অনড় ভারত রুশ সম্পর্ক , মূল নিশানা ‘ BRICS ‘ !

বর্তমানে, কিছু আন্তর্জাতিক অনুমান অনুযায়ী, ভারত ২০২৫ সালের মধ্যে জাপানের থেকে এগিয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে এবং আগামী বছরগুলিতে জার্মানিকে ছাড়িয়ে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। ভারতের অর্থনীতি বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলির মধ্যে অন্যতম, যা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং অর্থনীতিবিদদের কাছে ‘একটি উজ্জ্বল স্থান’ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, যদিও উভয় পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে বের করার কথা বলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর