ব্যুরো নিউজ ০৯ জুলাই ২০২৫ : উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ‘বুলডোজার নীতি’ আবারও শিরোনামে। মঙ্গলবার বলরামপুরের মাধপুর এলাকায় ধর্মান্তর ও দেশবিরোধী কার্যকলাপের মূল হোতা জামালউদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার বিলাসবহুল বাড়িটি ভেঙে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কঠোর অবস্থানেরই ইঙ্গিত দেয়।
অভিযোগের পাহাড়: জোরপূর্বক ধর্মান্তর, সন্ত্রাস ও অবৈধ লেনদেন
কয়েকদিন আগেই উত্তরপ্রদেশ এসটিএফ (STF) জোরপূর্বক ধর্মান্তর এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে জামালউদ্দিন ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছিল। নিরাপত্তা বাহিনী জামালউদ্দিন ও তার সহযোগীদের দ্বারা উপসাগরীয় দেশ এবং পাকিস্তান থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন উদঘাটন করেছে। বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে থাকা এই অভিযুক্তের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের দিকটি ইউপি এটিএস (ATS) তদন্ত করছে। এই বিশাল অঙ্কের অবৈধ লেনদেন এবং দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই প্রশাসনের এই কড়া পদক্ষেপ।
Bihar : বিহারের ঐতিহাসিক ই-ভোটিং উদ্যোগ: গণতন্ত্রে নতুন দিগন্ত?
বুলডোজার অভিযান: তালা ভেঙে বাড়িতে প্রবেশ
সূত্র অনুযায়ী, জামালউদ্দিনের কোটি কোটি টাকার বাংলোটি ভাঙার জন্য দুটি বুলডোজার ব্যবহার করা হয়। বাড়িটি তালাবদ্ধ থাকায় এবং কেউ দরজা খুলতে রাজি না হওয়ায়, কর্তৃপক্ষকে গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়। সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িটির গেটে একটি উচ্ছেদ নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেখানে বলা হয়েছিল যে এটি অবৈধ জমিতে নির্মিত এবং তা ভেঙে ফেলা হবে। এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার সময় পুলিশ সার্কেল অফিসার উত্রৌলা রাঘবেন্দ্র সিং সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জামালউদ্দিনের পুত্রবধূ সাবেরা, যিনি প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এসেছেন, তিনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে তারা শিশুদের ভয় দেখাচ্ছে, যারা পুলিশের কর্মকাণ্ডে ভীত হয়ে পড়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কড়া বার্তা
জামালউদ্দিনের বাড়িতে বুলডোজার পদক্ষেপ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার বোন ও কন্যাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তার জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে অভিযুক্ত জালালউদ্দিনের কার্যকলাপ কেবল সমাজবিরোধীই ছিল না, দেশবিরোধীও ছিল।”
এক্স (আগের টুইটার)-এ পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, “রাজ্যে শান্তি, সম্প্রীতি এবং নারীর নিরাপত্তা ভঙ্গকারীদের কোনো স্থান নেই। তাদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে, যা সমাজের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, “আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকার কোনো ধরনের শৈথিল্য বরদাস্ত করবে না। অভিযুক্ত এবং তার গ্যাংয়ের সাথে যুক্ত সমস্ত অপরাধীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এই পদক্ষেপটি উত্তরপ্রদেশে অপরাধ ও অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যোগী সরকারের জিরো-টলারেন্স নীতিরই প্রতিফলন।