DY Chandrachud eviction

ব্যুরো নিউজ ০৭ জুলাই ২০২৫ : ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় তাঁর সরকারি বাংলো খালি করতে দেরি হওয়ায় বিতর্কের মুখে পড়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে চিঠি লিখে দ্রুত বাংলোটি খালি করার অনুরোধ জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ব্যক্তিগত পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছেন।

বিতর্কের সূত্রপাত

 গত বছরের নভেম্বরে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার প্রায় আট মাস পরও বিচারপতি চন্দ্রচূড় দিল্লির ৫, কৃষ্ণ মেনন মার্গের সরকারি বাংলোটি ছাড়েননি। এই বাংলোটি বর্তমান প্রধান বিচারপতির জন্য বরাদ্দ। নিয়ম অনুযায়ী, একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সর্বোচ্চ ছয় মাস সরকারি আবাসন ধরে রাখতে পারেন, যা তাঁর ক্ষেত্রে ২০২৫ সালের ১০ মে শেষ হয়েছে। এরপরেও ৩১ মে পর্যন্ত একটি বর্ধিত অনুমতি ছিল, যা বর্তমানে শেষ হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি লিখে দ্রুত বাংলোটি খালি করার আবেদন জানিয়েছে।

কসবা কাণ্ডে প্রধান বিরোধী দল সরব অনুসন্ধানে এবং প্রতিবাদে !

চন্দ্রচূড়ের ব্যাখ্যা

নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, তাঁর দুই মেয়ের বিশেষ চাহিদা এবং গুরুতর অসুস্থতা (নেমালাইন মায়োপ্যাথি) রয়েছে। তাদের জন্য বাড়িতেই আইসিইউ-এর মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এইমস (AIIMS)-এর চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তাদের চিকিৎসা চলছে। এই বিশেষ পরিস্থিতির কারণেই তিনি সরকারি বাংলো খালি করতে পারেননি। তিনি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন বাড়ি খুঁজছেন এবং সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট ও হোটেলও চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনোটিই তাঁর মেয়েদের বিশেষ প্রয়োজনের উপযুক্ত হয়নি।

পূর্ববর্তী বিচারপতির অনুমতি

 চন্দ্রচূড় আরও জানান যে, তাঁর পূর্বসূরি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তাঁকে প্রথমে এপ্রিল মাস পর্যন্ত বাংলোতে থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন। এরপর তিনি জুন মাস পর্যন্ত আরও একটি বর্ধিত সময়ের জন্য আবেদন করেছিলেন, যা মৌখিকভাবে অনুমোদিত হয়েছিল।

সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান ও আবাসন নীতি

 সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, বাংলোটি আদালতের আবাসন পুলের অংশ এবং দ্রুত তা ফেরত পাওয়া জরুরি। রুল ৩বি (Rule 3B) অফ ২২ সুপ্রিম কোর্ট জাজেস রুলস (2022 Supreme Court Judges Rules) অনুযায়ী, একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সর্বোচ্চ ছয় মাস সরকারি আবাসন রাখতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট এই নীতি লঙ্ঘন হওয়ার বিষয়টিকে “অভূতপূর্ব” পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছে, কারণ সাধারণত এই ধরনের উচ্চ পদাধিকারীদের আবাসন খালি করার জন্য এতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।

‘ভারতের অন্যতম শক্তিশালী ও পরিশ্রমী মুখ্যমন্ত্রী’: যোগী আদিত্যনাথকে প্রশংসা প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের

চিন্তাভাবনার বিষয়

 একজন উচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি, যিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি সুবিধা উপভোগ করেছেন, তাঁর পক্ষে রাতারাতি সেই “কম্ফোর্ট জোন” ছেড়ে বের হয়ে আসা কঠিন হতে পারে। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি করে, যেখানে অন্যরা ব্যক্তিগত স্বার্থে নিয়মের অপব্যবহার করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত একটি বিশৃঙ্খল এবং স্বার্থপর ব্যবস্থার জন্ম দেয়। সমাজের উচ্চ স্তরের ব্যক্তিদের নিয়ম মেনে চলা উচিত, যাতে তা অন্য সকলের জন্য একটি আদর্শ স্থাপন করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর