ব্যুরো নিউজ ০৪ জুলাই : দেশের অর্থনীতির যখন ক্রমবর্ধমান , তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এক অভিনব ‘দানশীলতা’ দেখিয়েছে। বৃহস্পতিবার তারা ‘এমপ্লয়মেন্ট লিঙ্কড ইনসেনটিভ স্কিম’ (ELI) অনুমোদন করেছে, যার উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি। কিন্তু কমরেডরা বলছেন, এ তো স্রেফ বড় কর্পোরেট হাউসগুলোর মুখে অমৃত ঢেলে দেওয়া, আর শ্রমিকদের কপালে জুটবে শুকনো রুটি। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী), অর্থাৎ সিপিআই(এম)-এর পলিট ব্যুরো এক বিবৃতিতে এই ‘মহা-যোজনা’ অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানিয়েছে।
ELI প্রকল্প: আসলে কী এই ‘কর্মসংস্থান’ যোজনা?
বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ১.০৭ লক্ষ কোটি টাকার বিপুল বরাদ্দ সহ ELI ( শ্রম ভিত্তিক ইনসেন্টিভ ) প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। সরকারের দাবি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দুই বছরে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (EPFO) পরিচালিত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে ৩.৫ কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সহজ কথায়, সরকার চাইছে বেসরকারি নিয়োগকর্তাদের কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষার খরচ (যেমন পিএফ) বাবদ কিছুটা ছাড় দিতে, যাতে তারা আরও বেশি লোককে চাকরি দেয়। অনেকটা এমন যে, “তোমরা কিছু চাকরি তৈরি করো, আমরা তোমাদের বিলের কিছু অংশ মোকুব করব ।”
কর্পোরেটদের পকেট ভরাতে জনগণের টাকা!
সিপিআই(এম)-এর চোখে, এই প্রকল্প হলো নির্লজ্জ ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজম’-এর জ্বলন্ত উদাহরণ। বামপন্থী দলটি অভিযোগ করেছে, এই যোজনা ‘অনিরাপদ ও নিম্নমানের কর্মসংস্থান’ বাড়াবে, অথচ জনগণের টাকা দিয়ে বেসরকারি নিয়োগকর্তাদের খরচ, এমনকি তাদের আইনি দায়বদ্ধতাও ভর্তুকি দেওয়া হবে। “বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের এটি শ্রমিকদের পকেট কেটে কর্পোরেটদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার আরও একটি প্রচেষ্টা। এ তাদের স্বজনপ্রীতির আরও একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ,” দলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে। তাদের মতে, “ELI স্কিম যুবসমাজকে চাকরি সৃষ্টি, কর্মসংস্থান ও সামাজিক সুরক্ষার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের তহবিল কর্পোরেটদের কাছে স্থানান্তরের আরেকটি প্রতারণামূলক পরিকল্পনা।”
কৌটো নাচিয়ে কারখানায় তালা ঝোলানোর মতন কর্ম সুরক্ষা আর কিছুতে নেই !
বাম শাসিত কেরলে ‘ ভারত মাতা ‘ র প্রতীকে ‘ না ‘ ! বাতিল হল পরিবেশ দিবস !
ভঙ্গুর চাকরির ‘স্বর্ণযুগ’?
বাম দলের অভিযোগ, “এই স্কিম ভঙ্গুর ও অনিশ্চিত চাকরির প্রচার করবে, জনগণের কোষাগার থেকে দেশীয় ও বিদেশী উভয় নিয়োগকর্তার বিনিয়োগ ব্যয়, উৎপাদন ব্যয়, শ্রম ব্যয় এবং আইনি দায়বদ্ধতার জন্য ভর্তুকি দেবে।” অর্থাৎ, সরকার নাকি বলছে, “চিন্তা নেই, তোমরা অস্থায়ী আর কম বেতনের চাকরি তৈরি করো, আমরা তোমাদের সব খরচ পুষিয়ে দেব।” আহা, কী বুদ্ধি কমরেড ! শ্রমিকদের জন্য ‘সামাজিক সুরক্ষা’ আসবে, তবে চাকরিগুলো এতটাই ‘সুখী’ হবে যে যে কোনো মুহূর্তে কর্পোরেট দয়ালুদের ইচ্ছায় তা হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে পারে বলে বামপন্থীদের সংশয়। দেশের কোটি কোটি বেকার যুবকরা এবার স্বপ্ন দেখতে পারে… তবে কমরেড মতে তা ভঙ্গুর , যদিও প্রকল্পটি ভর্তুকিপ্রাপ্ত কর্মসংস্থানের । আপাতত কৌটো নাচানো প্রকল্পের অভাবে সাচ্চা কমরেড সবাই প্রায় বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত ।