ব্যুরো নিউজ ৩০ জুন: বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে সোমবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন। তিনি ২০১১ সালে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ (CIA) কর্তৃক প্রকাশিত একটি নথি শেয়ার করে দাবি করেছেন যে, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এইচ.কে.এল. ভগতের নেতৃত্বে ১৫০ জনেরও বেশি কংগ্রেস সাংসদ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে অর্থ পেয়েছিলেন এবং রাশিয়ার “এজেন্ট” হিসেবে কাজ করেছিলেন। এই অভিযোগ ভারতের রাজনীতিতে নতুন করে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
সিআইএ নথির উপর ভিত্তি করে অভিযোগ
নিশিকান্ত দুবে তার ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, “কংগ্রেস, দুর্নীতি এবং দাসত্ব। এই গোপন নথিটি ২০১১ সালে সিআইএ দ্বারা অবমুক্ত করা হয়েছিল। এটি অনুসারে, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এইচ.কে.এল. ভগতের নেতৃত্বে ১৫০ জনেরও বেশি কংগ্রেস সাংসদ সোভিয়েত রাশিয়া দ্বারা অর্থায়িত হয়েছিলেন, রাশিয়ার এজেন্ট হিসাবে কাজ করছিলেন?” এই দাবি করে তিনি কংগ্রেসের কাছে এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
সাংবাদিক ও গুপ্তচর সংস্থার ভূমিকা
বিজেপি সাংসদ আরও উল্লেখ করেছেন যে, একদল সাংবাদিকও রাশিয়ার “এজেন্ট” হিসেবে কাজ করতেন। নিশিকান্ত দুবে দাবি করেছেন, তার শেয়ার করা নথিতে রাশিয়ার প্রকাশিত ১৬,০০০ সংবাদ নিবন্ধের একটি তালিকা রয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, কংগ্রেস সরকারের সময় রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থার ১,১০০ জন কর্মী ভারতে ছিল। তারা আমলা, ব্যবসায়িক সংস্থা, কমিউনিস্ট পার্টি এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিজেদের “পকেটে” রেখেছিল, যার মাধ্যমে তারা ভারতের নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলত এবং তথ্য সংগ্রহ করত।
সুভদ্রা যোশীর বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ
নিশিকান্ত দুবে আরও অভিযোগ করেছেন যে, সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসনামলে কংগ্রেস প্রার্থী সুভদ্রা যোশী নির্বাচনের নামে জার্মান সরকার থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর তিনি ইন্দো-জার্মান ফোরামের সভাপতি হয়েছিলেন।
নিশিকান্ত দুবে তার পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন, “সাংবাদিকদের একটি দল তাদের এজেন্ট ছিল, এবং মোট ১৬,০০০ সংবাদ নিবন্ধের উল্লেখ রয়েছে যা রাশিয়া প্রকাশ করেছিল? সেই সময়ে, রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ১,১০০ জন লোক ভারতে ছিল, যারা আমলা, ব্যবসায়িক সংস্থা, কমিউনিস্ট পার্টি এবং মতামত নির্মাতাদের নিজেদের পকেটে রেখেছিল, তথ্যের সাথে ভারতের নীতিগুলিকে রূপদান করছিল। সেই সময়ে কংগ্রেস প্রার্থী সুভদ্রা যোশী নির্বাচনের নামে জার্মান সরকার থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন, এবং হেরে যাওয়ার পর ইন্দো-জার্মান ফোরামের সভাপতি হয়েছিলেন। এটা কি একটা দেশ নাকি দাস, এজেন্ট এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের পুতুল? কংগ্রেসকে জবাব দিতে হবে, আজ কি এর তদন্ত হওয়া উচিত নয়?”
জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ: চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে চুক্তির প্রসঙ্গ
সাধারণত, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ব্যাপক। তাদের কিছু কার্যকলাপ জাতীয় স্বার্থকে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে দাবি করা হয়। সম্প্রতি, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (CCP) সাথে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) এই ধরনের সমালোচনার একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে। সমালোচকরা মনে করেন, এই ধরনের চুক্তি দেশের নিরাপত্তা ও স্বার্থের সঙ্গে আপস করতে পারে।
এই অভিযোগগুলি ভারতের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এর প্রতিক্রিয়া কী আসে, তা এখন দেখার বিষয়।