ব্যুরো নিউজ ২৫ জুন : নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধনী এনে জানানো হয়েছে যে, চাকরির জন্য OBC প্রার্থীদের এখন জেনারেল প্রার্থীদের মতোই আবেদন করতে হবে। SSC জানিয়েছে, আদালতে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলে তবেই OBC তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা আবেদনপত্রে নিজেদের আলাদা ক্যাটাগরি উল্লেখ করতে পারবেন।
আবেদন ফি-এর ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য SSC-এর চাকরির পরীক্ষার আবেদনপত্রের দাম ২০০ টাকা। জেনারেল প্রার্থীদের জন্য এই টাকা ৫০০ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এখন এই ৫০০ টাকাই OBC প্রার্থীদেরও দিতে হবে।
বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত: ছাড়াল জাপানকে
আদালতের রায়ের পর ক্যাটাগরি আপডেটের সুযোগ
SSC-এর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, OBC মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়ার পর কমিশন আবেদনপত্রের জন্য নতুন একটি উইন্ডো চালু করবে। সেই সময় OBC প্রার্থীরা নিজেদের ক্যাটাগরি আপডেট করতে পারবেন। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের তৈরি করা নতুন সংরক্ষণ তালিকার উপর কলকাতা হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিস্তারিত
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের আগে মোট ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে OBC হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ২০১০ সালের পর যাদের OBC-তে নথিভুক্ত করা হয়েছে, তাদের শংসাপত্র বাতিল হয়েছে। কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, চাকরিহারাদের আপাতত পরীক্ষায় বসতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্য সরকার চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। গত ১৬ জুন থেকে চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ আগামী ১৪ জুলাই। পূর্বে শীর্ষ আদালত ২৪,২০৩টি পদে নিয়োগের কথা বললেও, রাজ্য সরকার পদের সংখ্যা বাড়িয়ে মোট ৪৪,২০৩টি পদে নিয়োগ করবে। এর মধ্যে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-এর পদও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে আরও জানিয়েছিলেন যে, বয়সের কারণে কেউ আটকাবে না। সকলেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। মমতা বলেছিলেন, “যারা চাকরি করে এসেছেন, অথচ বয়স পেরিয়ে গিয়েছে, চাকরিহারাদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বয়সে ছাড় দেওয়া হবে। বয়সের জন্য আটকাবে না। প্রত্যেকেই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। যারা এতদিন কাজ করেছেন, তাদের এক্সপেরিয়েন্স অ্যাডভান্টেজ দেব। যাতে তারা তাদের কর্মস্থানে থেকে যেতে পারেন।”
যদিও মুখ্যমন্ত্রী ৪৪,২০৩টি পদে নিয়োগ এবং চাকরিহারাদের বয়স ও অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে ছাড়ের কথা বলেছেন, তবে রাজ্য সরকারের দুর্নীতির আপোষে আদালতের বিভিন্ন নির্দেশ এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে। এই সামগ্রিক পরিস্থিতি সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, যা একটি স্থিতিশীল এবং স্বচ্ছ নিয়োগ পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তাকেই বারবার সামনে আনছে।