ব্যুরো নিউজ ২৩ জুন : দক্ষিণ কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পাহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় বড়সড় সাফল্য পেল জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)। এই নৃশংস হামলায় জড়িত পাকিস্তানি লস্কর-ই-তৈবা (LeT) জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে দুই স্থানীয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে NIA। এই ঘটনা কাশ্মীরের স্থানীয়দের মধ্যে সন্ত্রাসীদের ‘স্লিপার এজেন্ট’ হিসেবে কাজ করার বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষত যখন ওই অঞ্চলের অধিকাংশ ট্যুর গাইডই স্থানীয় বাসিন্দা।
গ্রেপ্তার ও জঙ্গিদের পরিচয় ফাঁস
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পাহেলগামের বাটকোটের বাসিন্দা পারভেজ আহমেদ জোথার এবং হিল পার্কের বাসিন্দা বশির আহমেদ জোথার। NIA-এর তদন্তে উঠে এসেছে যে, এই দুই ব্যক্তিই হামলার আগে হিল পার্কের একটি অস্থায়ী ধোক (ঝুপড়ি)-তে তিনজন সশস্ত্র জঙ্গিকে আশ্রয় দিয়েছিল। NIA-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃতরা হামলার সাথে জড়িত তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেছে এবং নিশ্চিত করেছে যে তারা নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সাথে যুক্ত পাকিস্তানি নাগরিক ছিল।
সশস্ত্র বাহিনীকে সম্মান জানিয়ে কলকাতায় বিজেপির তিরঙ্গা যাত্রা
ভয়াবহ হামলার নেপথ্যে স্থানীয় সহায়তা
NIA এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “পারভেজ এবং বশির জেনেশুনে হামলার আগে হিল পার্কের একটি মৌসুমী ধোক (ঝুপড়ি)-তে তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিল। এই দুই ব্যক্তি সন্ত্রাসীদের খাবার, আশ্রয় এবং লজিস্টিক্যাল সহায়তা দিয়েছিল। সেই দুর্ভাগ্যজনক বিকেলে সন্ত্রাসীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে পর্যটকদের বেছে বেছে হত্যা করেছিল, যা এ যাবৎকালের সবচেয়ে জঘন্য সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।”
এই ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক কারণ এটি প্রমাণ করে যে, ওই অঞ্চলের স্থানীয় কিছু বাসিন্দা সন্ত্রাসীদের ‘স্লিপার এজেন্ট’ হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে, যখন এই অঞ্চলের অধিকাংশ ট্যুর গাইডই স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অংশ হয়ে অন্য ধর্মাবলম্বী পর্যটকদের সন্ত্রাসবাদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয় ।
আইনি পদক্ষেপ ও চলমান তদন্ত
NIA আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট, ১৯৬৭-এর ১৯ ধারা (UAPA) অনুযায়ী এই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ২০২২ সালের ২২ এপ্রিলের যে হামলা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, সেই ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। NIA এই মামলার আরও গভীরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।