ব্যুরো নিউজ ২০ জুন: ভামিকা, এক বছরের ফুটফুটে শিশু যে হয়তো তার প্রথম পদক্ষেপগুলি নিত এবং পৃথিবীটা আবিষ্কার করত, সে এখন একটি বিরল ও মারাত্মক রক্ত ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছে। তার বেঁচে থাকার একমাত্র আশা একটি জরুরি স্টেম সেল প্রতিস্থাপন, যার আনুমানিক খরচ ২৬,০০,০০০ টাকা (প্রায় ৩০,৫৮৮ মার্কিন ডলার), যা তার পরিবার মরিয়া হয়ে জোগাড় করার চেষ্টা করছে।
হায়দ্রাবাদের রেইনবো চিলড্রেনস হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি ভামিকা জন্ম থেকেই এই দুর্বল করে দেওয়া রোগটির সঙ্গে লড়ছে। ঘন ঘন হাসপাতালে যাওয়া, একাধিক রক্ত সঞ্চালন (সে ইতিমধ্যেই ২৩ ধরনের রক্ত পেয়েছে) এবং এখন, সে বড় হওয়ার সাথে সাথে রক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ, এই সব নিয়েই তার ছোট্ট জীবন কাটছে। তার বাবা-মা, রাধিকা শিন্ডে এবং সাই কৃষ্ণ, তাদের সমস্ত সঞ্চয় শেষ করে ফেলেছেন এবং বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন, শুধুমাত্র তার প্রাথমিক যত্নেই ৫০,০০০ টাকার বেশি খরচ হয়েছে।
চিকিৎসায় গাফিলতি না কি চরম অবহেলা?
ভামিকার বাবা সাই কৃষ্ণকে তার মেয়ের যত্নের জন্য দীর্ঘ ছুটি নিতে হওয়ায় তিনি একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির চাকরি হারিয়েছেন। তিনি এখন একজন ফুড ডেলিভারি রাইডার হিসাবে কাজ করেন, সপ্তাহে মাত্র ২,০০০ টাকা উপার্জন করেন, যা ভামিকার প্রতিদিনের ওষুধের খরচ মেটানোর জন্যও যথেষ্ট নয়। রাধিকা হাসপাতালে তার মেয়ের পাশে থাকেন, একটি অলৌকিকের জন্য প্রার্থনা করেন।
রাধিকা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, “তার এখন বাড়িতে হেসে-খেলে থাকার কথা, প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, খেলনা নিয়ে খেলার কথা। এর বদলে, তার পৃথিবী রক্তর ব্যাগ, ইনজেকশন এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জালে বাঁধা।”
পরিবারের দুর্দশার সাথে যুক্ত হয়েছে যে, তাদের নিকটাত্মীয়দের মধ্যে কেউ স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত দাতা হিসাবে মেলেনি। এর অর্থ হল তাদের একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ দাতা খুঁজে বের করতে হবে, এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ, প্রক্রিয়াটির জন্য তহবিল সুরক্ষিত করতে হবে।
রেইনবো চিলড্রেনস হাসপাতালের মেডিকেল টিম ভামিকার অবস্থা যাচাই করেছে এবং নিশ্চিত করেছে যে হেমাটোপোয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট (HSCT) ই একমাত্র নির্দিষ্ট এবং নিরাময়মূলক চিকিৎসা।
পরিবার জনসমর্থনের আবেদন জানিয়ে একটি ক্রাউডফান্ডিং অভিযান শুরু করেছে। প্রতিটি অবদান, তা যত ছোটই হোক না কেন, ভামিকাকে তার প্রাপ্য জীবনের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে – এমন একটি জীবন যা তার অসুস্থতার ক্রমাগত হুমকি থেকে মুক্ত।
ভারত পেল ইন্টারপোলের প্রথম সিলভার নোটিশ, বিদেশে অপরাধী সম্পত্তি চিহ্নিতকরণে সহায়ক
আপনি কিভাবে সাহায্য করতে পারেন:
- দান করুন: স্টেম সেল প্রতিস্থাপনের খরচ মেটাতে জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। ক্রাউডফান্ডিং অভিযানের বিবরণ প্রায়শই Ketto-এর মতো প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যায়। (দয়া করে মনে রাখবেন: উল্লিখিত Ketto তহবিলটি ২৫শে জুন, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত শেষ হয়ে গেছে। এই নিবন্ধটি প্রদত্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, ধরে নেওয়া হচ্ছে যে বর্ণিত অবস্থার জন্য তহবিলের প্রয়োজন এখনও বিদ্যমান।)
- শেয়ার করুন: ভামিকার গল্পটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন যাতে এটি আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে।
- সচেতনতা বৃদ্ধি করুন: বিরল রক্ত ব্যাধি এবং ভারতে পরিবারগুলির মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে আরও জানুন। ইন্ডিয়ান অর্গানাইজেশন ফর রেয়ার ডিজিজেস (IORD) এর মতো সংস্থাগুলি রোগীদের সহায়তা এবং নীতি পরিবর্তনের জন্য কাজ করছে।
- ব্লাড স্টেম সেল দান করার কথা বিবেচনা করুন: যদিও ভামিকার নিকটাত্মীয়রা উপযুক্ত দাতা ছিলেন না, তবুও একজন নিবন্ধিত ব্লাড স্টেম সেল দাতা হয়ে অন্যদের জীবন বাঁচাতে পারেন যারা একই ধরনের অবস্থার সাথে লড়াই করছেন। DKMS BMST ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাগুলি স্টেম সেল দান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে।
ভামিকার বাবা-মা তাদের মেয়েকে একটি জীবন দেওয়ার জন্য প্রতিটি শ্বাস নিয়ে লড়াই করছেন। তারা সমাজের কাছে সহানুভূতি ও সমর্থনের আবেদন জানাচ্ছেন। আপনার উদারতা একটি গভীর পরিবর্তন আনতে পারে এবং ভামিকাকে তার প্রাপ্য ভবিষ্যত জীবনে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে।